বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দীর্ঘ দুই বছরের ওপর সময় ধরে করোনা মহামারির (Corona) কারণে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। ভারত সহ বিশ্বের একাধিক দেশে অর্থনীতির হাল তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। এই পরিস্থিতি মাঝেও বার্ষিক আয় যদি এক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়, তবে চক্ষু চড়কগাছ হতে বাধ্য আর বর্তমানে এ ঘটনার সাক্ষী থাকলো আমাদের বাংলা। করোনা পরিস্থিতি মাঝে এক কোটি টাকারও বেশি আয় করেছেন অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mondal), দাবি সিবিআই-এর (CBI)। এমনকি, আয়কর হিসেবে তিনি জমা করেন ২৯ লক্ষ টাকা। এই খবর সামনে উঠে আসতেই শোরগোল তুঙ্গে।
গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসে চলেছে। অনুব্রত ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও আত্মীয়দের নামে একদিকে যেমন কোটি কোটি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে, আবার অপরদিকে অনুব্রত কন্যার নামেও বিপুল পরিমাণ জমি এবং কোম্পানির খোঁজ পেয়েছে সিবিআই। বর্তমানে তাদের পেশ করার চার্জশিটে উঠে এলো সুকন্যার ব্যক্তিগত আয়ের চিত্র।
গরু পাচার মামলায় সম্প্রতি আদালতের নিকট একটি চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। এই চার্জশিট ঘিরে ইতিমধ্যে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে প্রকাশ্যে। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, ২০১২-১৩ আর্থিক বর্ষ থেকে শুরু করে প্রতিবছর লাফ দিয়ে বেড়ে চলেছে সুকন্যার সম্পত্তি। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, একজন সাধারণ স্কুল শিক্ষিকা হয়ে এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি বৃদ্ধি কিভাবে সম্ভব হল?
সুকন্যা মণ্ডলের সম্পত্তির খতিয়ান
২০১২-১৩ আর্থিক বর্ষ – ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা ২০১৩-১৪ আর্থিক বর্ষ – ৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা
২০১৪-১৫ আর্থিক বর্ষ – ১০ লক্ষ টাকা (অধিক)
২০১৫-১৬ আর্থিক বর্ষ – ৪৯ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা
২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষ – ৫১ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা
২০১৮-১৯ আর্থিক বর্ষ – ১ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা
২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষ – ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা
২০২১-২২ আর্থিক বর্ষ – ৯২ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা
প্রসঙ্গত, ২০১২-১৩ আর্থিক বর্ষ থেকে শুরু করে সম্পত্তি বহুগুণে বৃদ্ধি পায় অনুব্রতর স্ত্রী ছবি মণ্ডলেরও। এক্ষেত্রে প্রথম দিকে তাঁর বার্ষিক আয় ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হলেও মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে সেই পরিমাণ হয়ে দাঁড়ায় প্রায় এক কোটি ছুঁই ছুঁই! তবে আর্থিক হিসেবের এখানেই শেষ নয়, এক্ষেত্রে ওপরের পরিসংখ্যান ব্যক্তিগত আয়ের ওপর ভিত্তি করে তুলে ধরা হয়েছে। তবে সুকন্যার নামে যে সকল কোম্পানি এবং চালকল রয়েছে, সেখান থেকে আসা টাকার হিসেব ধরলে এই পরিমাণ আরো বহু গুণে বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান সিবিআইয়ের।
সিবিআই সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে তৃণমূল নেতা এবং তাঁর কন্যার নামে থাকা দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে তারা। এক্ষেত্রে ওই সকল অ্যাকাউন্টে থাকা মোট অর্থের পরিমাণ ৮ কোটির বেশি। করোনা মহামারির সময় বিপর্যস্ত অর্থনীতি মাঝে কিভাবে এত বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি করলেন অনুব্রত ও তাঁর পরিবার, তা নিয়ে বর্তমানে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা বাংলায়।