বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হামেশাই উঠে আসে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের ছবি। বিশেষ করে নানুরের কাজল শেখ (Kajal Sheikh) বনাম অনুব্রত মন্ডলের (Anubrata Mandal) অনুগামীদের লড়াই নতুন নয়। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল জেল থেকে ফিরে আসার পর থেকেই এই দুই শিবিরের মধ্যে অশান্তি নতুন মাত্রা পেয়েছে। তাই নতুন বছর শুরু হওয়ার পরেও বীরভূমে কাজল শেখ বনাম অনুব্রত মণ্ডলের অনুগামীদের মধ্যে দ্বন্দ কমেনি একফোঁটাও। এবার অনুব্রত অনুগামীদের মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কাজল শেখ অনুগামীদের বিরুদ্ধে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাজল শেখ ঘনিষ্ঠ তৃণমূল সভাপতি।
নানুরে অনুব্রত (Anubrata Mandal)-কাজল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
সম্প্রতি নানুরে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) এক অনুরাগীর ওপর ব্যাপক হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ মেরে ওই তৃণমূল নেতার হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এমনকি তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলিও চালানো হয়েছে। আর এই গোটা ঘটনায় আঙুল উঠছে কাজল শেখ ঘনিষ্ঠ অনুগামীদের দিকেই। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও একবার প্রকট হয়ে উঠেছে অনুব্রত মণ্ডল বনাম কাজল শেখের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
নানুর ব্লকের তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান রিঙ্কু চৌধুরী ক্ষোভ উগরে দিয়ে এপ্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমি কেষ্টদার আনুগামী। কেষ্টদা ফিরে আসার পর থেকে আমাদের উপর আক্রমণ চলছে। কাজল শেখের দলবল আমাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করেছিল। ২৫-৩০ জন মিলে আটকে দিয়েছিল। শাবল দিয়ে,বন্দুকের বাঁট দিয়ে মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে’। একইসাথে তিনি অভিযোগ করেছেন অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) দল করা যাবে না বলে শাসানো হয়েছে। বলা হয়েছে আসা যাবে না কেরিম খানের কাছে। শুধু তাই নয়, দু’রাউন্ড গুলি চালিয়েও তাঁর গাড়ি থামানো হয়েছিল বলেও অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ‘এখনই কড়া পদক্ষেপ..,’ অর্জুন সিং-কে নিয়ে বড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
কাজল শেখ ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, উনি অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। সেই টাকা নিয়ে ঝামেলা থেকেই এত কিছু। অন্যদিকে বীরভূমের বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা এবিষয়ে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘এলাকা দখল নিয়ে ঝামেলা। এছাড়া তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব তো রয়েইছে।’
প্রসঙ্গত অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal) জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে কাজল শেখ বনাম অনুব্রত অনুগামীদের লড়াই নতুন মাত্রা পেতে শুরু করেছে। এর আগে গত বছরের ডিসেম্বর মাসেও ওই নানুরেই অনুব্রত অনুগামীদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল কাজল শেখ অনুগামীদের বিরুদ্ধে। জানা যায়, দেড় মাস গ্রাম ছেড়ে থাকার পর অনুব্রত ফিরতেই সপরিবারে গ্রামে ফিরে এসেছিলেন নানুরের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য। তারপরেই তার ওপর ২০-২৫ জন মিলে হামলা চালিয়েছিল। অভিযোগ ছিল ওই হামলাকারীরা সকলেই ছিলেন কাজল শেখের অনুগামী। ওই ঘটনায় বোলপুরের এসডিপি এর কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তখনও দোষারোপ পাল্টা দোষারোপের পালা শুরু হয়েছিল, সেই রেশ কাটতে না কাটতেই সামনে এল আরও এক ঘটনা।