বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বোলপুর থানার আইসি-কে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। ‘কুকথাকাণ্ডে’ ক্রমেই চাপ বাড়ছে অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal)। পরপর দু’বার পুলিশি তলবে সাড়া না দেওয়ার পর বৃহস্পতিবার এসডিপিও অফিসে হাজিরা দিয়েছেন তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা। দলের অন্দরেও ক্রমে কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন বলে খবর। এই আবহে জানা গেল, পুলিশকে ‘হুমকি কাণ্ডে’ আইনি লড়াইয়ের জন্য বিজেপি নেতাকে আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত করেছেন কেষ্ট। তৃণমূলের (TMC) তাবড় তাবড় নেতাদের বাদ দিয়ে বিরোধী শিবিরের নেতার ওপরেই আস্থা রেখেছেন তিনি।
আইনজীবী হিসেবে কোন বিজেপি নেতাকে নিযুক্ত করলেন অনুব্রত (Anubrata Mondal)?
আইসি-কে ‘হুমকি কাণ্ডে’ গত শুক্রবার কেষ্টকে হাজিরা নোটিশ পাঠিয়েছিল পুলিশ। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে শনি ও রবিতে হাজিরা দেননি তৃণমূল নেতা। সেই সময় তাঁর হয়ে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা গিয়েছিল আইনজীবী বিপত্তারণ ভট্টাচার্যকে। যিনি আবার বীরভূম বিজেপি লিগ্যাল সেলের অন্যতম নেতা।
বীরভূমে তৃণমূলের একাধিক তাবড় আইনজীবী রয়েছেন। তা সত্ত্বেও কেন পদ্ম নেতাকে (BJP) নিযুক্ত করলেন অনুব্রত? তাহলে কি বিরোধী দলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে? ছাব্বিশের ভোটের আগে দলবদল করতে পারেন? পদ্ম শিবিরের অবশ্য দাবি, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। একজন পেশাদার আইনজীবী যে কারোর হয়ে মামলা লড়তে পারেন।
আরও পড়ুনঃ আইসি-কে ‘হুমকি’র পর ৭ দিন পার! অবশেষে SDPO অফিসে হাজিরা দিলেন অনুব্রত
বিজেপি নেতা সজল ঘোষের (Sajal Ghosh) আবার দাবি, ‘তৃণমূলের আইনজীবীদের কেরামতি সবাই জানে। ওরা সরকারি প্যানেলে রয়েছে। আসামীদের কাছ থেকে টাকা তুলে ওদের পেট চলে। ওদের ব্যক্তিগত মামলা লড়ার মতো যোগ্যতা নেই। অনুব্রতর পাশে দাঁড়ালে সরকারি প্যানেল থেকে যদি নাম বাদ চলে যায়! সেই ভয়ের জন্য কেউ ওর মামলা নিচ্ছে না’।
সূত্র উদ্ধৃত করে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, কেষ্টর বিজেপিতে যোগদান করার সম্ভাবনা কার্যত নেই। কিন্তু ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে নিজ জেলায় পিছন থেকে বিজেপিকে সাহায্য করতে পারেন তিনি। ইতিমধ্যেই বহু জায়গায় অনেক কেষ্ট অনুগামী গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। অনুব্রতর বিরুদ্ধে পুলিশ যদি কোনও কড়া পদক্ষেপ নেয় তাহলে সেই সংখ্যাটা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দল কেষ্টর পাশে নেই এটা ঠিক। বীরভূমের রাজনীতিতেও তিনি কার্যত একঘরে হয়ে গিয়েছেন। সেই কারণে হয়তো তৃণমূল নেতাদের বিশ্বাস করতে পারছেন না এই দাপুটে নেতা। দলের নেতারাও এই ঘটনার গুরুত্ব বুঝে কেষ্টর থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন। তাই বিজেপি নেতাকে নিজের আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, সদ্য বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদ খুইয়েছেন অনুব্রত (Anubrata Mondal)। কেষ্ট-গড়ে ওই পদটিই তুলে দিয়েছে শাসকদল। ৯ সদস্যের কোর কমিটিতে অবশ্য রয়েছেন এই তৃণমূল নেতা। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আইসি-কে হুমকির অভিযোগ। আগামী দিনে ‘কুকথাকাণ্ড’ কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার।