বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গরু পাচার মামলায় জামিন পেয়ে গত বছর পুজোর আগে ‘ঘর ওয়াপসি’ হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal)। তারপর ধীরে ধীরে রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। বিগত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছিল কেষ্ট-কাজল দ্বন্দ্বের কথাও। এবার তাঁর ‘ক্ষমতা’ কাড়ল তৃণমূল (Trinamool Congress)। বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদ খোয়ালেন অনুব্রত। শুধু তাই নয়! সংশ্লিষ্ট জেলায় ওই পদটিই তুলে দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল।
ছাব্বিশের ভোটের আগেই পদ হারালেন কেষ্ট (Anubrata Mondal)!
২০২২ সালে গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তারপরেই সেখানেই কোর কমিটি গড়ে দেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন কাজল শেখ। যার সঙ্গে অনুব্রতর সমীকরণ রাজনৈতিক মহলে কমবেশি সকলেই জানেন। গত বছর লোকসভা নির্বাচনের সময় অনুব্রত-হীন বীরভূমে ভালো পারফরম্যান্স করেছিল মমতার গড়ে দেওয়া কোর কমিটি। কেষ্ট না থাকলেও জেলার দু’টি আসনেই জয়ী হয়েছিলেন জোড়াফুল প্রার্থীরা। একুশের বিধানসভা ভোটে বিজেপির জেতা আসন দুবরাজপুরেও লিড পেয়েছিল রাজ্যের শাসকদল।
অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের অবশ্য দাবি, কেষ্ট যে সংগঠন সাজিয়েছিলেন, তার ওপর ভর করেই লোকসভা ভোটে ভালো ফলাফল করেছিল তৃণমূল (TMC)। গত বছর জেলমুক্তির পর কোর কমিটিতে স্থান করে নেন অনুব্রত। তারপর কয়েক মাস যেতে না যেতেই বীরভূমের জেলা সভাপতি পদটাই তুলে দিল তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুনঃ ‘এত বড় নেতা কেন চলে যাচ্ছেন পার্টিকে ভাবতে হবে’! বার্লার BJP ত্যাগে আশঙ্কার মেঘ দেখছেন দিলীপ?
শুক্রবার দলের জেলা সভাপতি ও চেয়ারপার্সনদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে জোড়াফুল শিবির। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, জেলায় দলের সংগঠন দেখভাল করবে দলনেত্রীর গড়ে দেওয়া কোর কমিটি। ৯ সদস্যের সেই কমিটিতে রয়েছেন অনুব্রত। তবে জেলা সভাপতি (District President) পদ হারিয়েছেন তিনি। বীরভূমে ওই পদটাই তুলে দিয়েছে তৃণমূল। তবে সংশ্লিষ্ট জেলায় দলের চেয়ারপার্সন পদ এখনও অক্ষুণ্ণ রয়েছে। রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ওই পদে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পরেও বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ হারাননি অনুব্রত (Anubrata Mondal)। তবে জামিন পেয়ে ফেরার পর তাঁকে বারবার মমতা বলেছিলেন, কোর কমিটির সঙ্গে সমন্বয় রেখে দল চালাতে হবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি কোর কমিটিকে এড়িয়ে কাজ করছিলেন বলে খবর। জানা যাচ্ছে, এর ফলে জেলার নেতাদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ বৃদ্ধি পায়। দলীয় সূত্র উদ্ধৃত করে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ওই খবরাখবর শীর্ষ নেতৃত্বের কানেও পৌঁছেছিল। শেষ অবধি বীরভূমে জেলা সভাপতি পদই তুলে দিল তৃণমূল।
উল্লেখ্য, বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে জেলায় জেলায় সংগঠন মজবুত করতে একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্যের শাসকদল। বীরভূমের পাশাপাশি কলকাতা উত্তরেও দল পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ৯ সদস্যের একটি কোর কমিটিকে। কলকাতা উত্তরের জেলা সভাপতির পদ খুইয়েছেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কোর কমিটিতে রয়েছেন সুদীপ পত্নী নয়না। এছাড়াও স্থানীয় বিধায়ক ও সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রভাবশালী কাউন্সিলর ও নেতৃত্বরাও স্থান করে নিয়েছেন ওই কোর কমিটিতে।