বাংলাহান্ট ডেস্ক : গরু পাচার কান্ড বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন। এক সময় যাঁর একটি ইশারায় বদলে যেতে পারত গোটা বীরভূমের রাজনৈতিক অবস্থা, সেই বেতাজ বাদশা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) এখন সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল হেফাজতে। গ্রেফতারের আগে সিবিআই (CBI) একাধিকবার অনুব্রতকে নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠিয়েছিল গরু পাচার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
কিন্তু প্রতিবারই বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে তা এড়িয়ে গিয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। প্রায় প্রতিবারই শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়েছিলেন এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা। অবশেষে গত ১১ আগস্ট বীরভূমে অনুব্রতর বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এরপরেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।
এরপর তাঁকে আসানসোলে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে তোলা হলে সেখান থেকে তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, সম্প্রতি শারীরিক কারণ দেখিয়ে জামিন চান তিনি। কিন্তু আদালত তা খারিজ করে দেয়। তাই আপাতত তাঁর ঠিকানা আসানসোলের বিশেষ সংশোধনাগার।
গতকাল মহালয়া দিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হল। পুজো আসার আনন্দে মেতে উঠেছে বাঙালি। জেলে বসে কেমন কাটল অনুব্রত মণ্ডলের মহালয়া? অন্যদিক তিনি সাধারণত সকাল ৯টায় ঘুম থেকে ওঠেন। তবে রবিবার মহালয়ার ভোরে অবশ্য উঠেছেন দিনের আলো ফোটার আগেই। বীরভূমের বেতাজ বাদশা রেডিয়োয় ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’ শুনেছেন বলে জানা গিয়েছে সংশোধনাগার সূত্রে।
জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, যে কোনও বিশেষ দিনে সেখানকার আবাসিকদের জন্য একটু অন্যরকম ব্যবস্থা রাখা হয়। মহালয়ার ভোরে প্রতি বছর আবাসিকদের রেডিয়োয় ‘মহিষাসুরমর্দ্দিনী’ শোনানো হয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অন্যান্য আবাসিকদের সঙ্গে এদিন কাকভোরে উঠে পড়েছিলেন কেষ্ট। এরপর রেডিওতে এই অনুষ্ঠানটি শোনেন তিনি।
সংশোধনাগারে তর্পণের জন্য কোনও ব্যবস্থা রাখা হয় না। জানা গিয়েছে, কল থেকে জল নিয়ে স্নান করে নিজের পিতৃপুরুষকে স্মরণ করেছেন অনুব্রত। আবাসিকদের জন্য রবিবারের মেনুতে ছিল মাছ-ভাত। তবে বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি এদিন এসব খাননি। তিনি এদিন নিরামিষ খাবারের জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন। তাই জেলের তরফে তাঁর জন্য লাউ-আলু-পটলের তরকারির ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পুজোর ক’টি দিনে আবাসিকদের জন্য খাবারের তালিকা একটু পাল্টানো হয়। সেই মতো এবার পুজোয় বিভিন্ন দিনে দেশি মুরগির ঝোল, খিচুড়ি, দই-কাতলা, পায়েস- এমন খাবারের আয়োজন রাখা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, আসানসোল জেলে আসার পর থেকেই পুকুরের মাছ ও দেশি মুরগির ঝোলের জন্য আবদার করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল।