বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) বাড়ির পরিচারকের মাইনে কত জানেন? মোটে ৫০০০ টাকা। যদিও এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২০ হাজার প্রতি মাস। মাসিক বেতনের হিসেব শুনে তার আর্থিক পরিস্থিতি অবশ্য বিবেচনা করলে ভারী অন্যায় হবে! কারণ, বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (Biswajit Banerjee) নামে ওই পরিচারকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থেকে ইতিমধ্যেই কোটি টাকার সন্ধান পেয়েছে সিবিআই, যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ স্বয়ং গোয়েন্দা অফিসারদেরও।
গরু পাচার মামলায় সম্প্রতি সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এরপরই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে সম্পত্তির খতিয়ান বের করতে তৎপর তদন্তকারী অফিসাররা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই অনুব্রত ও তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। এমনকি, এবার তাঁর পরিচারকের অ্যাকাউন্ট থেকেও কোটি টাকার সন্ধান পেল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
সূত্রের খবর, গরু পাচার মামলায় ইতিমধ্যেই অনুব্রতর বিরুদ্ধে ৩৫ পাতার একটি চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। এক্ষেত্রে আদালতে পেশ করার চার্জশিটে মোট ৯৫ জন সাক্ষীর নাম রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর একাধিক তথ্য। উক্ত চার্জশিটে দাবি করা হয়, অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পরিচারক বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের সময় একাধিক বিস্ফোরক তথ্য তাদের হাতে এসেছে। এক্ষেত্রে বর্তমানে তার বেতন ২০ হাজার টাকা হলেও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অর্থ।
সিবিআই সূত্রের দাবি, বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম ধাপে ৪৫ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা জমা করা হয় এবং পরবর্তীতে ৬২.৭৭ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার হয় ওই অ্যাকাউন্টে। ফলে সব মিলিয়ে কোটি টাকার মালিক অনুব্রতর বাড়ির কাজের লোক। সম্পত্তির হিসাব এখানেই শেষ নয়, এক্ষেত্রে তৃণমূল নেতার বাড়ির কাজ দেখাশোনা করা বিদ্যুৎ গায়েনের নামেও প্রায় ৮ কোটির কাছাকাছি অর্থের জমি ক্রয় করা হয়েছিল বলে দাবি সিবিআইয়ের।
সিবিআই আরও জানিয়েছে যে, বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় স্বীকার করেছে যে, তার ব্যাঙ্কের টাকা বিভিন্ন পার্টির কাছ থেকে আসতো। সেক্ষেত্রে তাকে দিয়ে শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ওপেন করা হয়েছিল এবং মাঝেমধ্যে সই করানো হতো। তবে এ সকল নিয়ন্ত্রণ করতেন অনুব্রত মণ্ডল এবং সায়গল হোসেন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জেগেছে, একজন বাড়ির কাজের লোকের কাছে এক কোটির অধিক অর্থ এলো কোথা থেকে? সিবিআইয়ের অনুমান, এই টাকা গরু পাচার দুর্নীতি মামলার সঙ্গে জড়িত।
একইসঙ্গে অনুব্রত মণ্ডল যে তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নামে একাধিক বেনামি সম্পত্তি রেখে চলেছিলেন, সে বিষয়েও দাবি জানায় সিবিআই। এক্ষেত্রে অনুব্রতর পরিচারক বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিদ্যুৎ বরণ গায়েনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যেন তারই প্রকৃষ্ট উদাহরণ।