বাংলাহান্ট ডেস্ক : দুই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে ধুয়ে মুছে গেছে বিজেপি। বালিগঞ্জে বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বামেরা। সব মিলিয়ে শোরগোল রাজ্য বিজেপির অন্দরে। এহেন পরিস্থিতিতে দলের বিরুদ্ধেই মুখ খুলছেন রাজ্যস্তরের নেতারা। সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা মনে করিয়ে কার্যতই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন তাঁরা। গতকালই দলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। এবার দলের অন্দরের কোন্দল নিয়ে মুখ খুললেন অনুপম হাজরা।
এদিন একাধিক নেতা নেত্রীর দলত্যাগ প্রসঙ্গে রাজ্যস্তরের শীর্ষ নেতৃত্বকে একহাত নিয়েছেন অনুপম। ফেসবুকে একটি পোস্টে এদিন তিনি লেখেন, ‘কেন এতগুলো ইস্তফা একসঙ্গে, সেটা রাজ্য বিজেপির খুব গুরুত্ব সহকারে বিচার-বিশ্লেষণ করা উচিত! আমি যতদূর জানি গৌরীশংকর বাবু একজন ভালো সংগঠক !যাদেরকে এতদিন গুরুত্ব দেওয়া হলো তারা সব দল ছেড়ে চলে গেছে, আর যাঁরা এতদিন মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন, তারা ইস্তফা দিচ্ছেন ! আর এক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা আমার মতো, যারা বঙ্গ-বিজেপির অসময়ে মানে যখন পশ্চিমবঙ্গে মানুষ বিজেপিতে যোগ দিতে ভয় পেত,
অর্থাৎ বঙ্গ-বিজেপির সুসময়ে যোগ দেওয়া রাজিব-সব্যসাচী এবং কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মত জামাই আদর খাওয়া মানুষদের বিজেপিতে আসার অনেক আগে বিজেপিতে যোগদান করে, রাস্তায় নেমে যথেষ্ট পরিমাণে আন্দোলনও করেছিলো, যখন অন্যদের মাঠে নেমে আন্দোলন করতে দেখা যেত না, তৃণমূলের কাছ থেকে যথেষ্ট পরিমাণে পুলিশ কেসও খেয়েছে আর এখন প্রতিনিয়ত দাদা মাঠে নামুন, আপনাদের আর আন্দোলনে দেখা যায় না কেন? শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতে লেকচার দিলে হবে? এই ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হন।কিন্তু তবুও রাজ্য বিজেপি থেকে দূরে, দিল্লিতে বা অন্য রাজ্যে পার্টির কাজ করতেই বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করে !আসল রহস্যটা কী?’
এদিন সংবাদমাধ্যমকে অনুপম হাজরা বলেন, ‘মাঝেমধ্যেই দেখি বঙ্গ বিজেপির বিভিন্ন নেতার হতাশা, খারাপ লাগা, স্যোশাল মিডিয়ায় ভেসে ওঠে। আজ সকালে দেখলাম তিনজন নেতা ইস্তফা দিয়েছেন। তার মধ্যে একজন আছেন রাজ্য সম্পাদক গৌরিশঙ্কর বাবু। বাকিদের ব্যাপারে না জানলেও এটা জানি যে গৌরিবাবু মুর্শিদাবাদের মত জায়গায় বিজেপির সংগঠনকে যথেষ্ট শক্তিশালী করেছেন। এই মানুষগুলোর মতন যাঁরা মাটি কামড়ে দলের সংগঠনকে শক্ত করেছেন, তাঁরা ইস্তফা দিলে তা সংগঠনের পক্ষে বড়সড় ধাক্কা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতকালই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। তিনি বলেন, ‘অপরিণত রাজনীতিবিদরা মাথার উপরে বসলে ভালো ফলের আশা করাই উচিত না। যাঁদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছিল দল থেকে আমার মনে হয় অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করে তাঁদের দলে ফেরানো উচিত এবং সবাই মিলে আবার একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা নেতা, বস নই, একথাটা মনে রাখতে হবে।’
উপনির্বাচনের হারকে কেন্দ্র করে যে কার্যতই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে, তা বলাই বাহুল্য।