৩৮ বছর ধরে দেশবাসীর মন জয় করে আসছে Titan, ঘড়ি ছাড়া আর কী কী বানায় টাটার এই কোম্পানি?

বাংলাহান্ট ডেস্ক: টাইটেন (Titan) নামটির সঙ্গে কে না পরিচিত! টাটা গ্রুপের (Tata Group) এই প্রোডাক্ট  শুরু থেকেই শেয়ার বাজারে নিজের জায়গা বানিয়ে নিয়েছিল। একটি লম্বা সময় অবধি ভারতে ঘড়ি মানেই টাইটেন চিনতেন দেশবাসী। আটত্রিশ বছর আগে শুরু হওয়া এই ঘড়ির সংস্থা আজ শুধু ঘড়িই নয়, আরও অনেক দ্রব্যই তৈরি করে। এমনকী, শেয়ার বাজারে নাম লেখানোর পর বিনিয়োগকারীদেরও ব্যাপক লাভের মুখ দেখিয়েছে টাইটেন ওয়াচেস লিমিটেড।

জানিয়ে রাখি, এই ঘড়ির কোম্পানিটি বিনিয়োগকারী রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালারও পছন্দের ছিল। ২০২২ অর্থবর্ষে ২৯ হাজার ৩৩ কোটি টাকার ব্যবসা করে এই সংস্থা। বর্তমানে টাইটেনের মার্কেট ক্যাপিটাল ২.২০ লক্ষ কোটি টাকা। গত ৮ জানুয়ারি টাইটেনের একটি শেয়ারের দাম ছিল প্রায় ২৫০০ টাকা।

titan watch

এছাড়াও এই সংস্থা তাদের ব্যবসার পরিসর আরও বাড়াতে উদ্যত হয়েছে। গত ডিসেম্বরে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে মোট ১১১টি নতুন দোকান খুলেছে টাইটেন। এছাড়াও ৩৬টি নতুন টাইটেন আই প্লাস স্টোর খুলেছে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে। ২০২৩ অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে টাইটেনের লাভের পরিমাণ ছিল ৮৫৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৩৩ শতাংশের বৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল। এছাড়াও ঘড়ি ও অন্যান্য পরার মতো জিনিসের ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে টাইটেনের। পাশাপাশি, আইকেয়ার ব্যবসায় বার্ষিক ১০ শতাংশ বৃদ্ধি দেখিয়েছে টাইটেন।

টাইটেন কোম্পানির যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৪ সালের ২৬ জুলাই। এটি টাটা গ্রুপ skinnও তামিল নাড়ু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের মধ্যে একটি যৌথ উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠার দু’বছর পর ঘড়ি তৈরি করতে শুরু করে এই কোম্পানি। এরপর ১৯৮৭ সাল থেকে বাজারে ছেয়ে যায় টাইটেন ঘড়ি।

 

tanishq

দেশের ঘড়ির বাজার কব্জা করার পর ব্যবসা আরও বাড়াতে শুরু করে টাইটেন। ঘড়ির পাশাপাশি অন্যান্য প্রোডাক্টের উপরেও নজর দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালে টাইটেন ওয়াচেস লিমিটেড থেকে নাম পাল্টে রাখা হয় টাইটেন ইন্ডাসট্রিজ লিমিটেড। ১৯৯৪-তে গয়নার বাজারে প্রবেশ করে টাইটেন। মার্কিন একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চালু হয় তানিষ্ক। বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ডেড গয়নার প্রস্তুতকারক তানিষ্ক।

গয়নার ক্ষেত্র থেকে ৮০ শতাংশেরও বেশি লাভ করে টাইটেন। ২০২২ অবধি দেশের গয়নার বাজারে ৬ শতাংশ শেয়ার হয় টাইটেনের। তানিষ্কের পর টাইটেন আই প্লাস চালু করা হয়। দেশের চশমার বাজার দখল করে নেয় এই সংস্থা। এছাড়াও সোনাটা ব্র্যান্ডও লঞ্চ করে টাইটেন। ক্রেতারা আজও এই ব্র্যান্ড সমানভাবেই পছন্দ করে আসছেন।

skinn

১৯৯৮ সালে যুবদের বাজার ধরতে টাইটেন ফাস্টট্র্যাক চালু করে। ঘড়ি ও অন্যান্য ফ্যাশনের জিনিস বিক্রি করতে শুরু করে তারা। এর ফলে টাইমেক্স ব্র্যান্ডটির সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয় ফাস্টট্র্যাকের। ২০১৯ সাল অবধি বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ঘড়ি প্রস্তুতকারক হয় টাইটেন। ঘড়ি ও অ্যাসেসরিজ ছাড়াও অন্যান্য পণ্যের উপরেও নজর দেয় টাইটেন। ২০১৩ সালে প্রসাধনী ব্র্যান্ড স্কিন লঞ্চ করা হয়। ছ’জন শ্রেষ্ঠ প্রসাধনী প্রস্তুতকারকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৈরি হয় এই পারফিউম। 

লঞ্চের পরেই বাজার দখল করে এই ব্র্যান্ডটি। এটির প্যাকেজিং ফ্রান্সে হয়। শুধু তাই নয়, আরো অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রবেশ করে টাইটেন। ২০১৭ সালে শাড়ির ব্র্যান্ডও চালু করে টাইটেন। বেঙ্গালুরুতে তানেইরা নামক শাড়ির দোকান খোলা হয়। টাইটেন কোম্পানি সাত হাজারেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। এছারাও বিনিয়োগকারীদেরও পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এই সংস্থা। রিপোর্ট অনুসারে, শেয়ার বাজারের ‘বিগ বুল’ রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালাও এই কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করতেন। যার ফলে তাঁর সম্পত্তি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

Subhraroop

সম্পর্কিত খবর