বাংলা হান্ট ডেস্ক: মানুষের জীবনে প্রযুক্তির অবদান প্রচুর। জীবনযাপন সহজ থেকে সহজতর করে তোলার পাশাপাশি জীবন বাঁচানো, সবেতেই রয়েছে প্রযুক্তি। গাড়ি দুর্ঘটনায় আরোহীকে বাঁচানোই হোক বা সঠিক সময় যাত্রীদের সতর্ক করে দেওয়াই হোক, প্রযুক্তি নানা সময়েই প্রমাণ করেছে যে সে মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে। এ বার তেমনই একটি ঘটনা সামনে এল।
অ্যাপল ওয়াচ (Apple Watch), দেখতে একটি হাত ঘড়ির মতো। তবে এর মধ্যেই রয়েছে একাধিক প্রযুক্তির ব্যবহার। এ বার এই অ্যাপল ওয়াচই একটি নজির সৃষ্টি করল এক কিশোরের প্রাণ বাঁচানোর। পুণের সেই কিশোর সম্প্রতি জানিয়েছে, কয়েক মাস আগে লোনাভলাতে একটি ট্রেকে গিয়ে প্রাণঘাতী একটি দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিল সে। তখন তাকে রক্ষা করে তার হাতে থাকে ছোট্ট অ্যাপলের ঘড়িটিই। কী ঘটেছিল সেখানে?
চলতি বছরের জুলাই মাসে সুমিত মেহতা লোনাভলাতে বন্ধুদের সঙ্গে একটি ট্রেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। সেই সময় সে পুণেতে নিট পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ট্রেকে গিয়ে ফেরার সময় বৃষ্টির মধ্যে টাল সামলাতে না পেরে খাদে পড়ে যায় সুমিত। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে এখনও শিউরে ওঠে ১৭ বছর বয়সী ওই কিশোর। সে বলে, “আমি একটি গাছের উপর পড়ে যাই ও একটি পাথরে আটকে যাই। খাদের একদম কিনারায় গিয়ে ফেঁসে যাই আমি।”
সুমিত জানিয়েছে, সে কোনওভাবে প্রাণে বেঁচে যায় কিন্তু পা ভেঙে যায় তার। পাশাপাশি আরও অনেক জায়গায় চোট পায় সে। কোনওভাবে দলের থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল সুমিত। তাই সে যে খাদে পড়ে গিয়েছে তা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি কেউ। একা থাকার ফলে কাউকে সাহায্যের জন্য ডাকতেও পারছিল না সে। ঠিক সেই সময় তার মনে পড়ে, এক বন্ধুর ব্যাগে সে তার ফোন রেখে দিয়েছে।
ঘটনার সময় সে অ্যাপল ওয়াচ ৭ সিরিজ পরে ছিল হাতে। এই ঘড়িতে যে নেটওয়ার্ক রয়েছে তার মাধ্যমে নিজের মা-বাবাকে ফোন করতে সক্ষম হয় সুমিত। সে দুর্ঘটনায় পড়েছে দেখে সুমিতের বন্ধুদের খবর দেন তাঁরা। তারপর তারা ও আরও ট্রেকাররা মিলে খবর দেন উদ্ধারকারী দলকে। শেষ পর্যন্ত উদ্ধারকারী দল গিয়ে সুমিতকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়।
সুমিত বলেছে, “আমি রক্তাক্ত অবস্থায় গভীর জঙ্গলে ছিলাম। আমার সঙ্গে যদি অ্যাপল ওয়াচ না থাকত তাহলে উদ্ধারকারী দলের আমায় খুঁজে পেতে আরও বেশি সময় লেগে যেত।” ওই কিশোরকে উদ্ধার করে লোনাভলার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার একটি অস্ত্রপচার হয়। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে। অবশেষে অগস্টে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আপাতত সে সেরে উঠছে।
অ্যাপলের সিইও টিম কুককে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটে যাওয়া ঘটনার বিবরণ দিয়ে একটি ইমেইল করে সুমিত। তাকে অবাক করে দিয়ে তার ইমেইলের জবাব দেন টিম। সুমিতের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে টিম লেখেন, “আমি জেনে খুব খুশি হয়েছি যে তুমি সুস্থ হয়ে উঠছ।”