বাংলাহান্ট ডেস্ক: গত সপ্তাহে জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েল (Israel) পুলিশের অ্যাকশনের পর উত্তেজনা ছড়িয়েছে। আরব দেশগুলি ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের এই কাজের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছে। গত ৫ এপ্রিল একাধিক প্যালেস্তিনীয় বিক্ষোভকারী আল-আকসা মসজিদে ঢুকে পড়ে। তাদের সরাতে ইসরায়েলি পুলিশ মসজিদের ভিতর পদক্ষেপ করে। ৩৫০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
ইসলামিক দক্ষিণপন্থী সংগঠন হামাস দাবি করেছিল যে ইহুদি দক্ষিণপন্থীরা আল-আকসা মসজিদের (Al-Aqsa Mosque) বিতর্কিত চত্বরে একটি পাঁঠা বলি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। তাদের এই কাজ আটকাতেই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল হামাস। এই মসজিদ থেকে শুরু হওয়া ঝামেলার ফলে ইসরায়েল ইসলামিক দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা শুরু করেছে। গত ৮ এপ্রিল গাজা এবং লেবাননে হামাসের কয়েকটি জায়গায় বোমাবাজি চালায়।
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপগুলির কড়া নিন্দা করেছে বিভিন্ন ইসলামিক দেশ। আল-আকসা মসজিদের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে জর্ডান। তারা জানিয়েছে, ইসরায়েল এমন চালাতে থাকলে তাদের ভারী মূল্য চোকাতে হবে। পাশাপাশি, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, তুরস্ক, কাতার এবং কুয়েত ইসরায়েলের এই কাজের প্রতিবাদ করেছে। তারা জানিয়েছে, ইসরায়েলের এই কাজ মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট করেছে।
গোটা প্রসঙ্গে মুখ খুলেছে ইসরায়েল। তাদের বিদেশ মন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করেছে। তারা জানিয়েছে, মসজিদের পবিত্রতা যারা নষ্ট করতে চেয়েছিল তারা হামাস এবং অন্যান্য দক্ষিণপন্থী সংগঠনের সদস্য। তারা আরও জানিয়েছে, ঘটনার সময় প্রথমে জর্ডানকে বলা হয় ওয়াকফ রক্ষীদের দিয়ে মসজিদ খালি করাতে। কিন্তু তারা সেটা করেনি। আরও একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিকেলের নমাজ চলাকালীন কয়েকজন যুবক মসজিদে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
আল-আকসা মসজিদ এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত এই মসজিদকে ইহুদিদের পবিত্রতম ধর্মস্থান বলা হয়। একইসঙ্গে এটি মুসলিমদেরও তৃতীয় পবিত্রতম ধর্মস্থান। ইহুদিরা এটিকে ‘টেম্পল মাউন্ট’ বলে। অন্যদিকে মুসলিমরা এটিকে বলে ‘আল-হারাম আল-শরিফ’। এর মধ্যে আল-আকসা মসজিদ এবং ‘পাথরের গম্বুজ’ পড়ে। পাথরের গম্বুজকে ইহুদিদের সবচেয়ে পবিত্র জায়গা বলা হয়। মুসলিমরাও এটিকে পবিত্র মনে করেন। কারণ এর সঙ্গে মহম্মদের যোগ রয়েছে। এখানে অ-মুসলিমরা প্রার্থনা করতে পারেন না। মসজিদ চত্বর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে জর্ডানের ওয়াকফ বোর্ড। কিন্তু এর নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে ইজরায়েল।