বাংলাহান্ট ডেস্ক : মা নাকি মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছেন এই গুজব ছড়িয়ে ছিল গ্রাম জুড়ে। কিন্তু মা কী কখনো তা পারেন? আসলে বিষয়টি ছিল সম্পূর্ণ অন্য। মা জানতেন তাঁর মেয়ে ছোট থেকেই ক্রিকেটের (Cricket) জন্য পাগল। তাই মেয়ের স্বপ্নপূরণের জন্যেই বিশেষ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করেছিলেন। আর তারপরেই মেয়েকে বিক্রির খবর রটে যায়। সাবিত্রী দেবীর লড়াইয়ের ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, কর্কট রোগের (Cancer) কবলে পড়ে প্রাণ হারান অর্চনার বাবা।
তবে, বলা বাহুল্য স্বামী ক্যান্সারে চলে গেলেও মনের জোর হারাননি সাবিত্রী দেবী। শুধু স্বামী নয়, সাপের কামড়ে মারা যায় তাঁর ছোট ছেলেও। এই ঘটনার পর গ্রামের মধ্যে গুজবই ছড়িয়ে যায় যে, সাবিত্রী দেবী একজন ডাইনি, আর তাঁর হাতে তাই একে একে মৃত্যু (Death) হচ্ছে তাঁর পরিবারের সকলের। ডাইনি অপবাদ শোনার পরেও তাতে কান দেননি অর্চনার মা, সাবিত্রী দেবী। মেয়েকে নিজে কষ্ট করে হলেও ভর্তি করিয়ে ছিলেন কস্তুরবা গান্ধী আবাসিয়া বালিকা বিদ্যালয়ে।
স্কুলটি উত্তরপ্রদেশের (Uttarpradesh) উন্নাও, রাতাই পুরওয়া থেকে ১৫-২০ কিলোমিটার দূরে গঞ্জ মোরাদাবাদের মেয়েদের একটি বোর্ডিং স্কুল হিসেবে এলাকায় জনপ্রিয় ছিল। এই স্কুলটিতে ভর্তি করার পর তো গ্রামের লোক স্বীকারই করে নেয় যে, তিনি তাঁর মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু আজ তার হাতেনাতে জবাব মিললো। এই রবিবার ভারত বনাম ইংল্যান্ডের (India vs England) অনুর্ধ ১৯-এর বিশ্বকাপ ফাইনাল (U 19 WC Final) ছিল। এতেই শুধু নিজের মায়ের নয় তিনি জয় করে নিয়েছেন গোটা ভারতের মন। তিনি একাই প্রায় খেলে জিতিয়ে দিলেন ভারতের অনুর্ধ ১৯-এর মহিলা ক্রিকেট টিমকে।
সংবাদ সূত্রে জানা যায় যে, আগে গ্রামের মানুষেরা সাবিত্রী দেবীকে দেখলেই নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতো, যে তিনি নাকি মোটা টাকার বিনিময়ে কোনো দালালের কাছে হয়তো সে তার মেয়েকে বেচে দিয়েছে। অর্চনা অর্থাৎ তার মেয়ে নাকি তার জন্যই খারাপ পথে চালিত হয়েছে। কিন্তু আজ বিশ্বকাপ জয়ের ফলে সেইসব গ্রামের মানুষই অর্চনার গর্বে গৌরবান্বিত। তারা সকলেই এখন অর্চনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এতো কিছু হারিয়েও আজ সাবিত্রী দেবী মেয়ের কৃতিত্বে সবচেয়ে বেশী খুশি। মেয়ের গর্বে কোন মা না খুশি হন!