মুর্শিদাবাদের হিংসাত্মক ঘটনায় যোগ রয়েছে বাংলাদেশের কট্টরপন্থীদের? সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ওয়াকফকে ঘিরে হিংসার আগুনে পুড়ছে পশ্চিমবঙ্গ। মূলত, ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও অস্থিরতার খবর পাওয়া যাচ্ছে। যার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মুর্শিদাবাদে (Murshidabad Violence)। সামশেরগঞ্জ থেকে শুরু করে ধুলিয়ান-সুতি সহ একাধিক জায়গায় হিংসাত্মক ঘটনার খবর সামনে আসছে। ইতিমধ্যেই একাধিক সরকারি সম্পত্তিতে ভাঙচুর ও আগুন লাগানো হয়েছে। রাজ্যের বাকি অংশেও অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ছে। সমগ্র রাজ্যজুড়ে এই হিংসাত্মক ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

মুর্শিদাবাদে হিংসাত্মক (Murshidabad Violence) ঘটনা:

এদিকে, সামগ্রিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মুর্শিদাবাদের জনগণ যথেষ্ট আতঙ্কিত। শুধু তাই নয়, এই প্রশ্নটাও সামনে আসছে যে এই অস্থিরতার পেছনে কারা রয়েছে? এই প্রতিবাদ কী কেবল ওয়াকফের বিরুদ্ধে নাকি এই বিক্ষোভের পেছনে বাংলাদেশি কট্টরপন্থীদের কোনও যোগসূত্র আছে তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। জানিয়ে রাখি যে, মুর্শিদাবাদ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা এবং মুর্শিদাবাদে (Murshidabad Violence) অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। এমতাবস্থায়, বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন যে, সমগ্র মুর্শিদাবাদ জেলা এখন আর সাংসদ এবং বিধায়কদের নিয়ন্ত্রণে নেই বরং পিএফআই, সিমি এবং আনসারুল বাংলা টিমের মতো চরমপন্থী সংগঠন, মালদা এবং মুর্শিদাবাদের কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Are Bangladeshi extremists involved in Murshidabad Violence?

ওয়াকফের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, টার্গেট করা হচ্ছে পুলিশকে: ইতিমধ্যেই বাংলায় একদিনেই ১১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদের সুতি, ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরের ছবি দেখলে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, একটি বিশেষ শক্তি অশান্তি তৈরি করছে।একটি বড় অংশ পুলিশের সাথেও সংঘর্ষে জড়িত। তারাই নাশকতা ঘটিয়েছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন যে সংঘর্ষে জড়িতরা মূল মিছিলের অংশ ছিল না। অর্থাৎ, ওয়াকফ-বিরোধী মিছিল শেষ হওয়ার পর, কিছু বিচ্ছিন্ন মানুষ হিংসা ছড়াচ্ছে। তারা পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়ছে, বোমা নিক্ষেপ করছে এবং লুঠপাট করছে। তাদের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে আক্রমণকারীরা পেশাদার অপরাধী।

আরও পড়ুন: রাহুল-সোনিয়া পেলেন বিরাট ঝটকা! ৭০০ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করছে ইডি

সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, স্থানীয়রাও হামলাকারীদের শনাক্ত করতে পারছে না। এখানেই প্রশ্ন উঠছে যে সাধারণ মানুষ বোমা বহন করে মিছিল করবে না। পুলিশের দিকে ইট, পাথর বা বোমা ছোঁড়ার চিন্তাও সাধারণ মানুষের মাথায় আসে না। আর সেজন্যই “পেশাদার অপরাধী” শব্দটি প্রযোজ্য হচ্ছে।এমনকি যেসব এলাকায় অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ছে, সেখানকার বাসিন্দারাও তাদের (হিংসাত্মক ঘটনায় জড়িতদের) শনাক্ত করতে পারছেন না। অনেক গ্রামবাসী জানিয়েছেন যে, তাঁরা তাদের চেনেন না। জানিয়ে রাখি যে, দেশে এবং বাংলায় এনআরসি এবং কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে। কিন্তু সেখানেও সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ করা হয়নি। কিন্তু, এবারের এই হিংসাত্মক ঘটনায় (Murshidabad Violence) বাংলাদেশি মৌলবাদীদের জড়িত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

আরও পড়ুন: হনুমান জয়ন্তীতে পুজো দিলেন গম্ভীর! জানালেন শুভেচ্ছা, নেটমাধ্যমে মন জিতল ধাওয়ানের পোস্ট

মুর্শিদাবাদ বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন জেলা: উল্লেখ্য যে, মুর্শিদাবাদ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি জেলা। এখানে বাইরের শক্তির প্রবেশ অস্বাভাবিক কিছু নয়।কয়েক বছর আগে কালিয়াচক থানা পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পরবর্তী তদন্তে জানা যায় যে, কোনও উগ্রপন্থী বাহিনী নয় বরং জাল নোট এবং মাদক পাচারকারী চক্রের সাথে জড়িত অপরাধীরাই ওই অঞ্চলে সক্রিয় ছিল। ধুলিয়ান, সুতিও বাংলার সংবেদনশীল এলাকাগুলির (Murshidabad Violence) মধ্যে অন্যতম। একদিকে রয়েছে ঝাড়খণ্ডের সীমান্ত, অন্যদিকে বাংলাদেশের সীমান্ত। তাই, এটি মাদক চোরাচালান এবং জাল মুদ্রার অন্যতম করিডোর।বর্তমানে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় অপরাধীরা আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আর এই কারণেই অন্যান্য রাজ্যের অপরাধীর অথবা অন্যান্য দেশের কট্টরপন্থীদের দ্বারা উস্কানির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X