বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি, কাঁচা পাটের দামের উর্ধ্বসীমা বেঁধে দেয় কেন্দ্র সরকার আর তা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে একপ্রকার ক্ষোভ উগরে দেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে পথে নামতেও দেখা যায় তাঁকে আর এবার অর্জুনের সেই আন্দোলন সফল হতে চলেছে বলেই খবর।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে যে, পাটের দামের উর্ধ্বসীমা বলে আর কিছুই থাকবে না অর্থাৎ দামের উর্ধ্বসীমা সংক্রান্ত নিয়ম তুলে নিতে চলেছে কেন্দ্র সরকার। এখনো পর্যন্ত অবশ্য এহেন কোন খবর সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শুক্রবার এই সংক্রান্ত ঘোষণা করতে পারে কেন্দ্র। তবে এই খবর যদি সত্যি হয়, তবে তা অর্জুন সিংয়ের বড় জয় হবে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
গত বছর জাতীয় জুট কমিশনার পাটের উর্ধ্বসীমা কুইন্টাল প্রতি 6500 টাকায় সীমাবদ্ধ করে দেন। এরপর থেকেই অর্জুন সিং কেন্দ্র সরকারের এই নিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। সেই সময় বিজেপি নেতা জানান, “আমার লড়াই জারি থাকবে যতক্ষণ না পাটের উর্ধ্বসীমা তুলে নেওয়া হয়। এই নিয়মের ফলে একাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন, আমি তা হতে দিতে পারি না।” এমনকি এই প্রসঙ্গে অর্জুন সিং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লেখেন এবং সেখানে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পাশে থাকারও বার্তা দেন। এরপরে জল্পনা উঠতে শুরু করে যে, বিজেপি ছেড়ে হয়তো শাসকদলে প্রত্যাবর্তন করতে চলেছেন অর্জুন!
অবশ্য এ প্রসঙ্গে অর্জুন সিং মন্তব্য করে বলেন, “তৃণমূলের যোগ দেওয়ার কোনো ব্যাপার নেই। পাট শিল্পীদের জন্য আমার এই লড়াই।” এই জল্পনা মাঝেই দিল্লিতে ডাক পড়ে অর্জুনের। বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠক হলেও কোন সমাধানের রাস্তা বের হয় না এবং বৈঠক শেষে বেরিয়ে অর্জুন সিং জানান, “ললিপপে ভুলছি না।” আর বাস্তবেও তিনি তা করে দেখালেন।
যদিও এর মাঝে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রণালয় জানায়, “2020 সালে পাটের সীমা বেঁধে দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং সেক্ষেত্রে তারা কুইন্টাল প্রতি 6000 টাকা ধার্য করে। সে ক্ষেত্রে আমরা সেই দাম আরো বৃদ্ধি করেছি।” অপর এক পরিসংখ্যান দাবি করে যে, কুইন্টাল প্রতি পাট উৎপাদন এবং এর সহায়ক মূল্য যেখানে 2832 টাকা এবং 4500 টাকা, সেখানে পাটের উর্ধ্বসীমা ধার্য করার সিদ্ধান্তে কোনো রকম ভুল নেই।” তবে এবার শেষ পর্যন্ত অর্জুন সিংয়ের আন্দোলনের সামনে হার স্বীকার করতে হলো কেন্দ্র সরকারকে।
এর মাঝেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল অর্জুন সিংয়ের? বিশেষজ্ঞদের মতে অবশ্য এখনো এ ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ ভবিষ্যতে এমন কোনো ইস্যু আবার উঠতেই পারে, যার দরুণ বিজেপি ছেড়ে শাসকদলে পুনরায় একবার অর্জুন সিংকে দেখা গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।