বাংলা হান্ট ডেস্ক: বাংলাদেশের (Bangladesh) একটি আদালত হিন্দু সংগঠন “সম্মিলিত সনাতনী জোট”-এর নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিনের আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদ করায় ইসকনের ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। দেশদ্রোহিতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত করার অভিযোগে তাঁকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশ গ্রেফতার করে। এর প্রতিবাদে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরা ঢাকার রাজপথে নেমে সড়ক অবরোধ করেন। যেখানে তাঁরা হামলার সম্মুখীনও হন।
বাংলাদেশে (Bangladesh) সংখ্যালঘুদের ওপর চলছে হামলা:
এদিকে, সামগ্রিক বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে এবার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এই ঘটনার সমালোচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, “আমরা খুবই চিন্তিত যে বাংলাদেশ (Bangladesh) সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাঁকে এখনও জামিন দেওয়া হয়নি। এর আগেও আমরা দেখেছি যে বাংলাদেশে হিন্দু এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে।” এর পাশাপাশি বাংলাদেশ হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চালানোর পাশাপাশি সেখানে যে মন্দির ভাঙচুর করা থেকে শুরু করে দেব-দেবীর মূর্তি ভাঙা হয়েছে সেই বিষয়টি উপস্থাপিত করা হয়।
বিবৃতিতে এটাও জানানো হয়েছে যে, “শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির প্রতিবাদে যাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করছিলেন, তাঁরাও হামলার শিকার হয়েছেন। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করছি, যেন হিন্দু এবং সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল এবং মত প্রকাশের অধিকারকে নিশ্চিত করা হয়।” জানিয়ে রাখি যে, এর আগে গত ৩০ অক্টোবর বাংলাদেশের (Bangladesh) জাতীয় পতাকার অবমাননার দায়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভু সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Our statement on the arrest of Chinmoy Krishna Das:https://t.co/HbaFUPWds0 pic.twitter.com/cdgSx6iUQb
— Randhir Jaiswal (@MEAIndia) November 26, 2024
গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে আট দফা দাবিতে সমাবেশ করেছিল সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সময়ে ওই চত্বরে অবস্থিত আজাদী স্তম্ভে কয়েকজন ব্যক্তি জাফরান পতাকা উত্তোলন করেন। এই পতাকায় লেখা ছিল “আমি সনাতনী”। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মাত্র ১৩ বছরেই কোটিপতি! নিলামের পর ছেলের বয়স বিতর্কে মুখ খুললেন বৈভবের বাবা, স্পষ্ট জানালেন….
হিন্দু সংখ্যালঘুদের দাবি: গত অগাস্টে পড়ুয়াদের আন্দোলনের জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয় শেখ হাসিনাকে। তারপরে শেখ মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের (Bangladesh) দায়িত্ব নেয়। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতা থেকে উৎখাত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা বেড়েছে। এদিকে, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা ও অধিকারের দাবিতে গত অক্টোবর থেকে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ শুরু করে সনাতন জাগরণ মঞ্চ। যেখানে সরকারকে একাধিকবার আক্রমণ করেছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভু।
আরও পড়ুন: পার্থ টেস্ট জেতার পরে আচমকাই দেশে ফিরছেন গম্ভীর! সামনে এল কারণ, ফের কবে যোগ দেবেন দলে?
তাঁর নেতৃত্বে হিন্দু সংখ্যালঘুরা ৮ টি প্রধান দাবিতে আওয়াজ তুলেছেন। এর মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রক গঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হোস্টেলে সংখ্যালঘুদের জন্য প্রার্থনার স্থান ও পূজার কক্ষ তৈরি করা, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টকে অগ্রাধিকার দেওয়া, সম্পত্তি হস্তান্তর আইন বাস্তবায়ন, পালি ও সংস্কৃত শিক্ষা বোর্ডের আধুনিকীকরণ এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিনের ছুটি।