বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার ঘোষণা হল সাগরদিঘি উপনির্বাচনের (Sagardighi By Election) ফলাফল। আর তা সমগ্র রাজ্যবাসীর চোখের সামনে। পঞ্চায়েত ভোট পূর্বে সাগরদিঘিতে বিরোধী শিবিরের কাছে শাসকদলের পরাজয় যে কিছুটা হলেও অশনি সংকেত দিচ্ছে, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যখন পরাজয়ের কারণ নিয়ে শাসকদলের অন্দরে চলছে বিশ্লেষণ ঠিক সেই সময়েই পরাজয়ের পেছনে উঠে এল পার্থ (Partha Chatterjee) প্রসঙ্গ।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে বর্তমানে জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যে পাহাড়প্রমান দুর্নীতি উঠে আসার পর এটাই ছিল বঙ্গে প্রথম কোনও নির্বাচন। আর তাতে বিপুল ভোটে পরাজয়ের পর পার্থকেই দুষছেন শাসক দলের একাংশ। তাদের মত, বাম-কংগ্রেস জোটপ্রার্থীর পক্ষে বিজেপির ভোট চলে যাওয়া যদি সাগরদিঘিতে তৃণমূলের পরাজয়ের একটা কারণ হয়ে থাকে, তবে ওপর কারণটি হল পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে চলতি তদন্ত।
দলের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিত্বে থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি সাগরদিঘির ভোটে বড় প্রভাব ফেলেছে বলেই মত দলেরই একাংশের। দলের সাথেই সহমত তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। তার কথায়, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতার এবং তার পরের ঘটনাবলি দলের যে ক্ষতি করেছে, তা অতীতে কখনও হয়নি। সাগরদিঘির ভোটের ফল খারাপ হওয়ার পিছনে সেটাই একমাত্র কারণ না হলেও অবশ্যই একটা কারণ।’’
তবে সাগরদিঘিতে পরাজয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাগরদিঘি উপনির্বাচনে আমরা হেরেছি। কাউকে দোষ দেব না। গণতন্ত্রে হার-জিত লেগেই থাকে। কিন্তু এখানে অনৈতিক একটি জোট হয়েছে। যার তীব্র নিন্দা করছি আমরা।’’ সুপ্রিমোর মতে, সাগরদিঘিতে ‘অনৈতিক’ জোট হওয়াই তৃণমূলের হারের কারণ।
শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেত্রী বলেন, কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএম, এই তিন দলের মধ্যে ‘লেনদেনের সম্পর্ক’ রয়েছে। তার কথায়, ‘‘বিজেপির ভোট গুনলে দেখা যাবে তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ২২ শতাংশ। এ বার ওরা নিজেদের ১৩ শতাংশ ভোট কংগ্রেসকে হস্তান্তরিত করেছে।’’ অন্যদিকে, মমতাময়ী মমতার এই দাবি মানতে নারাজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
তবে বিরোধীদের ভোট যে তাদের ভোটব্যাংকে এসেছে সেকথা অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন অধীরবাবু। উপনির্বাচনে বিপুল জয়ের পর তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস প্রার্থী যেমন বামফ্রন্টের ভোট পেয়েছেন, তেমনই বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের বড় অংশের ভোটও পেয়েছেন। আর বিজেপির ভোটাররা যারা এই ভোটে তৃণমূলের পরাজয় চেয়েছিলেন, তারাও কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দিয়েছিলেন।’’