বাংলাহান্ট ডেস্ক : একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগের নাজেহাল অবস্থা দিল্লির আপ (AAP) সরকারের। এরই মধ্যে আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীওয়ালের (Arvind Kejriwal) বিরুদ্ধে উঠল চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। বিরাট অংকের টাকা খরচ করে নাকি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে নিজের শিক্ষা মডেলের খবর ছেপেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এর পর সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড় দেন জেলবন্দি সুকেশ চন্দ্রশেখর। জেল থেকে আরও একটি খোলা চিঠিতে সুকেশের দাবি, কেজরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ভুল প্রমাণ হলে ফাঁসিতে চড়তেও রাজি তিনি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি পরামর্শও দিয়েছেন সুকেশ। বলেছেন, তাঁকে ভুল প্রমাণে ব্যর্থ হলে কেজরীর উচিত পদত্যাগ করে রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়া।
সুকেশ এদিন দাবি করেন, তাঁর দেওয়া টাকাতেই ‘দ্যা নিউইয়র্ক টাইমসে’ নিজের শিক্ষা মডেলের খবর ছাপান কেজরিওয়াল। এই খাতে খরচ হওয়া ৬.৮৫ কোটি টাকা পুরোটাই দিয়েছিল সুকেশ। ডিসেম্বরের গোড়ায় গুজরাত এবং দিল্লি পুরনিগমের নির্বাচনের আগে পর পর তিন বার খোলা চিঠিতে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়াল, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনকে বিঁধেছেন তিহাড় জেলে বন্দি সুকেশ। গত সপ্তাহের গোড়ায় দিল্লির লেফ্টেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনাকে চিঠি লিখে সুকেশের দাবি করেছিলেন, সত্যেন্দ্র তাঁর কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা তোলা নিয়েছেন। এর পর শনিবার আর একটি খোলা চিঠিতে সুকেশের নতুন দাবি, ৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে রাজ্যসভায় মনোনয়ন পাইয়ে দিতেন কেজরী। এতে দিল্লির প্রাক্তন ডিজি সন্দীপ গয়াল-সহ জেল কর্তৃপক্ষও জড়িত বলে দাবি তাঁর। মঙ্গলবারের চিঠিতে সুকেশের চ্যালেঞ্জ, ‘‘কেজরীজি, দিল্লির লেফ্টেন্যান্ট গভর্নরকে লেখা কোনও অভিযোগ ভুয়ো হলে (যেমনটা আপনি এবং আপনার সঙ্গীরা দাবি করেন) আমি ফাঁসিতে চড়তে রাজি। তবে ওই অভিযোগগুলি সত্য প্রমাণিত হলে আপনি পদত্যাগ করবেন এবং রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেবেন।’’ সুকেশের এই চিঠি প্রকাশ্যে এনেছেন তাঁর আইনজীবী।
লেফ্টেন্যান্ট গভর্নরকে লেখা চিঠি প্রত্যাহার করার জন্য জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে চাপ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন সুকেশ। তিনি লেখেন, ‘জেল কর্তৃপক্ষকে দিয়ে আমার উপর ক্রমাগত চাপ দেওয়ানো হলেও আমি মুখ খুলিনি। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত চলাকালীনও দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিস্টার জৈন নির্লজ্জ ভাবে আমার কাছ থেকে পঞ্জাব এবং গোয়ার ভোটের জন্য টাকা চাইতেন।’ এর পর কেজরীর উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘কেজরীজি, অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য মিস্টার জৈন কেন বার বার বলছেন? কেন আমাকে বার বার হুমকি দেওয়া হচ্ছে? তদন্তে ভয় পাচ্ছেন কেন? আপনি যদি সত্য কথা বলছেন, তবে এত ভয় কিসের?’
সুকেশের বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকা তোলাবাজি ও তহবিল তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। জেলবন্দি থাকাকালীন খোলা চিঠিতে কেজরীকে ‘মহাঠগ’ বলেও তকমা দিয়েছেন সুকেশ। তবে তাঁর সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বলে পাল্টা দাবি আপের। গুজরাত এবং দিল্লি পুরনিগমের নির্বাচনের আগে বিজেপির নির্দেশেই আপের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করতে অভিযোগ করছেন বলেও দাবি কেজরীর দলের। খোলা চিঠিতে এই অভিযোগেরও জবাব দিয়েছেন সুকেশ। তিনি লিখেছেন, ‘কেজরীওয়ালজি, ভোটের জন্যই এ সব করা হচ্ছে, এমনটা বলা বন্ধ করুন। আপনাকে একটি পরামর্শ দিচ্ছি। আপনি এবং মিস্টার জৈন আমাকে ভাল করেই চেনেন। এই অলীক ধারণা করবেন না যে আমি (দুর্নীতির অভিযোগগুলি) প্রমাণ করতে পারব না বা সাক্ষ্য দেব না!’