বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০১১ সালে বামেদের ৩৪ বছরের সিংহাসন টলিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। তারপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলো বছর, ষোলোর নির্বাচনে কংগ্রেসের হাত ধরেও আশানুরূপ ফল পায়নি বাম শিবির। একুশের নির্বাচনে কার্যত বিধানসভায় কোন অংশীদারিত্ব নেই তাদের। তাই একদিকে যেমন বাংলায় বামেদের অস্তিত্ব সংকট, তেমনি অস্তিত্বের সংকট দেশজুড়েও। কারণ বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে ক্রমশ কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছেন মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee)।
যার জেরে রবিবারই টুইট করে কংগ্রেস জানিয়েছে, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে দিদির হাত ধরতে কোন আপত্তি নেই তাদের। এমনকি ২৮ তারিখ দিল্লিতে যে বৈঠক করবেন তৃণমূল নেত্রী, তাতে উপস্থিত থাকতে পারে একাধিক বিজেপি বিরোধী দল। এমতাবস্থায় বামেদের যে উভয় সংকট, তা আর আলাদা করে বলে দিতে হয় না। এর আগেও দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র (suryakanta Mishra) জানিয়েছিলেন, রাজ্যে বিরোধিতা চললেও কেন্দ্রে বিজেপিকে থাকাতে মমতার হাত ধরতে বামেদের কোন আপত্তি নেই।
বিজেপি বিরোধী শক্তি হিসেবে মমতার উত্থান যে কেন্দ্র-রাজ্যে ক্রমশ কোণঠাসা করছে বামশিবিরকে তা বলাই বাহুল্য। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক ছুৎমার্গ রাখতে গেলে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা ক্রমশই অসম্ভব হয়ে পড়বে। বামেদের প্রধান শত্রু কারা? তা নির্বাচন করতে গেলে, অবশ্যই প্রথমে উঠে আসবে বিজেপির নাম। আর তাই কৌশলে এবার বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুও (Biman Basu ) বার্তা দিলেন, “বিজেপি তো দেশটা বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত করছে৷ ওদের ষড়যন্ত্রে দেশের মানুষের দুর্দশা বেড়েছে৷ জনবিরোধী এই শক্তিকে থামাতেই হবে৷ সেজন্য সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী ঐক্যে কে থাকল, সেটা বড় ফ্যাক্টর নয়৷ বিজেপিকে রুখে দেওয়াটাই হবে আমাদের সকলের প্রধান লক্ষ্য৷’’
অনেকে অবশ্য বলছেন, ৩৪ বছরের মৌরসিপাট্টা গিয়েছে। আর এখন ঠেলার নাম বাবাজি। তাই অস্তিত্ব বাঁচাতে গেলে মমতাকে পাশে রাখা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বামেদের। ২০২৪ সালের লোকসভায় বিজেপির বিরুদ্ধে মহাজোট গড়ে তুলতে চাইছেন মমতা। সেই জোটে না থেকে বিজেপির বিরোধিতা করা মানে কার্যত রাজনৈতিকভাবে ‘বিচ্ছিন্ন দ্বীপ’ হয়ে পড়া বলেও মনে করছেন অনেকেই। আর এই সমস্ত কারণ মাথায় রেখেই বার্তা বিমানের, অন্তত এমনটাই মত রাজনৈতিক পর্যালোচকদের।