বাংলাহান্ট ডেস্কঃ নির্বাচনের পর থেকে বেসুরোদের তালিকা যেন বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই কোন না কোন বিজেপি (bjp) নেতৃত্বের গলায় শোনা যাচ্ছে বেসুরো সুর। বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে, নানা অজুহাতে দল ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন বহু নেতৃত্ব। তার মধ্যে বাদ গেল না আসানসোলও (Asansol)।
‘মন ভেঙে গিয়েছে আমার’ বলে সম্প্রতি দিনে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে তৃণমূলে ফেরার তোরজোড় করছেন আসানসোলের জেলা সম্পাদক মদনমোহন চৌবে। ‘তৃণমূলে যাচ্ছি আমরা’ বললেও, কিন্তু শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিজেপি জেলা সম্পাদকের পদেই বহাল ছিলেন তিনি।
একুশের নির্বাচনে ২০০-র বেশি আসন নিয়ে বাংলা দখলের স্বপ্ন কার্যত ধূলিস্মাৎ হয়ে যায় বিজেপির। আর এই পরাজয়ের জন্য উচ্চপদস্থ নেতাদের দায়ি করে মদনমোহন চৌবে বলেন, ‘নির্বাচনে যাদের টিকিট দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের বদলে অন্যদের টিকিট দিলে ভালো হত। শুধু এখানেই নয়, অনেক জায়গাতেই এমনটা দেখা গেছে। মনটা পুরো ভেঙে গেছে আমার। দল যে নিজের আদর্শ থেকে বেরিয়ে যাবে, দুর্নীতি করবে, তা ভাবতে পারিনি। আর কিছুদিন পরই জানতে পারবেন এই দুর্নীতির সঙ্গে কারা জড়িত রয়েছেন, বড় ছোট কেউই বাদ নেই। এখন দল করার কোন মানসিকতাই আর বেঁচে নেই’।
বিজেপি সদস্যদের এমন মতিগতি দেখে বেজায় উচ্ছ্বসিত তৃণমূল শিবির। এপ্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন জানিয়েছেন, ‘আসানসোলের বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই বিজেপি এবং সিপিএম কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। দলকে সব জানানো হয়েছে এবং নির্দেশ পেলেই তাঁদের দলে নেওয়া হবে। নির্বাচনের পর বিজেপির ক্ষমতা বুঝে গিয়েছে সকলে, কর্মীদের দুঃখ বোঝার কেউ নেই, সেই কারণেই সকলে চলে আসছেন’।
এরই মধ্যে আবার শোনা গিয়েছে, আসানসোলের রবীন্দ্রভবনে এক ‘যোগদান মেলার’ আয়োজন করেছে তৃণমূল শিবির। আর সেখানেই গেরুয়া শিবিরের প্রায় ৪০০ নেতা এবং কর্মীরা হাতে তুলে নেবেন ঘাসফুলের পতাকা। এবিষয়ে আসানসোলের বিজেপি নেতা লক্ষ্মণ ঘোড়ুই জানিয়েছেন, ‘দল ছেড়ে যাওয়ার কোন খবর নেই আমাদের কাছে। এখনও অবধি এখান থেকে কেউই দল ছাড়েননি। তবে দীর্ঘ সন্ত্রাসের জেরে কর্মীদের মনে হতাশার জন্ম হয়েছে। তৃণমূল, সিপিএম বা কংগ্রেসের মত বিজেপি অত ঠুনকো নয়, যে ভয় পেয়ে কর্মীরা দলত্যাগ করবেন। আমাদের বিশ্বাস আছে, কেউই দল ছেড়ে যাবেন না’।