বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বুধবার অর্থাৎ ১৪ ডিসেম্বর ছিল শুভেন্দু ডেডলাইনের (Suvendu Deadline) দ্বিতীয় দিন। বিরোধী দলনেতার ভবিষৎবাণী মাফিক কিছু না ঘটলেও, এদিনই শুভেন্দুর আসানসোলের (Asansol) বক্তৃতা সভা শেষে কম্বলদান কর্মসূচিতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তিন জনের। আহত হন বহু। ঘটনার জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে বঙ্গ রাজনীতি। শুভেন্দু অধিকারীর গ্রেফতারির আর্জিও উঠে আসে বিরোধী মহল থেকে। এরপর শুক্রবার এই ঘটনায় বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি (Jitendra Tiwari) এবং তাঁর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হল আসানসোল উত্তর থানায়। তবে নাম নেই শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)।
সূত্রের খবর, কম্বলদান কর্মসূচির অন্যতম আয়োজক ছিলেন আসানসোল পুরসভার বিরোধী নেত্রী চৈতালি তিওয়ারি। প্রথম থেকেই আসানসোলের ঘটনায় আয়োজকদের বিরুদ্ধে উঠেছে গাফিলতির অভিযোগ। কী ভাবে পাঁচ হাজার লোককে কম্বল বিলি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়, কেন তার উল্লেখ পুলিশকে পাঠানো চিঠিতে নেই? কেন নেই বিরোধী দলনেতার হাজির থাকার প্রসঙ্গও? এত বড় কর্মসূচীতে কেন ছিল না কোনো অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা? প্রশ্ন উঠছে এই সকল বিষয়েই। একই সঙ্গে, প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুলিশের ভূমিকাও। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় বিজেপি কাউন্সিলর সহ মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জিতেন্দ্রর অভিযোগ ,‘‘তৃণমূল তাড়াহুড়ো করে আমার বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছে।’’ অন্যদিকে বিরোধীদের দিকে নিশানা করে তৃণমূল বিধায়ক তথা মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, ‘‘কর্মসূচি ছিল বিজেপির। এর মধ্যে তৃণমূল কোত্থেকে এল? তৃণমূল কোনও ভাবেই এর সঙ্গে জড়িত নয়। জিতেন্দ্র তিওয়ারি ভুলভাল বকছেন!’’
এই প্রসঙ্গে আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুধীরকুমার নীলকণ্ঠম জানান, শুক্রবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে হাজির করিয়ে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হবে। সাথেই তিনি জানান,কী ভাবে ঘটনাটা ঘটল, তার তদন্ত শুরু হয়েছে। ডিসি ওয়েস্ট অভিষেক মোদীর তত্ত্বাবধানে চলছে তদন্ত।
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে চৈতালিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন বুধবারের ঘটনায় মৃত ঝালি বাউরির ছেলে সুখেন বাউরি। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ (অবহেলার কারণে মৃত্যু), ৩০৮ (অপরাধজনিত নরহত্যার চেষ্টা) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
এই বিষয়ে কী জানাচ্ছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব? অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’ তবে একেবারেই বিপরীত প্রতিক্রিয়া শোনা গেল দিলীপ ঘোষের কণ্ঠে। এই ঘটনায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘শুধু পুলিশের ভরসায় কর্মসূচি করা যায় না। নিজেদেরও কিছু ব্যবস্থা রাখতে হয়।’’ প্রসঙ্গত, এই ঘটনা প্রসঙ্গে এর আগেও বিরোধী দলনেতার দিকেই আঙ্গুল তুলেছিলেন দিলীপ ঘোষ।
অন্যদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘অনুষ্ঠানটিই অবৈধ। পুলিশের অনুমতি ছাড়া হয়েছে। আয়োজকদের ব্যর্থতার কথা দিলীপ ঘোষই বলে দিয়েছেন।’’