বাংলা হান্ট ডেস্ক : আতিক আহমেদের নারকীয় হত্যাকাণ্ড (Atiq Ahmed’s Murder) নিয়ে তোলপাড় জাতীয় রাজনীতি। মাফিয়া থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা আতিকের খুন নিয়ে যোগি প্রশাসনকে নিশানা করেছেন এআইএমআইএম (AIMIM) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি (Asaduddin Owaisi)। সাংবাদিক সম্মেলনে হায়দরাবাদের সাংসদ বলেন, ‘আমি বারবারই বলেছিল, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি আইনের শাসন দিয়ে সরকার চালাচ্ছে না বরং বন্দুকের নিয়মে সরকার চালাচ্ছে। এটা ঠান্ডা মাথায় খুন। এই ঘটনা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলছে। এই ঘটনার পর কি সাধারণ মানুষ আর সংবিধান এবং দেশের আইনের ওপর ভরসা করবেন?’ ওয়াইসির আরও দাবি, ‘আমি উত্তরপ্রদেশে যাব। আমি মরতেও রাজি আছি। তবে এই কট্টরপন্থাকে থামাতে হবে। আমি ভয় পাব না। প্যায়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া।’
যোগি প্রশাসনকে আক্রমণ করে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি টুইটে লেখেন, ‘আতিক ও তাঁর ভাই পুলিস হেফাজতে ছিলেন। তাকে হাতকড়া পরানো হয়েছিল। জেএসআর স্লোগানও ওঠে। উভয়েরই হত্যাই যোগির আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার ব্যর্থতা। যারা এনকাউন্টার রাজ উদযাপন করছে তারাও এই হত্যার জন্য দায়ী। যে সমাজে খুনিরা বীর, সে সমাজে আদালত ও বিচার ব্যবস্থার কাজ কী?’ অপর এক টুইট বার্তায় একটি পাঁচ লাইনের কবিতা লিখে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি প্রশ্ন করেন, ‘আইনের শাসন নাকি বন্দুকের শাসন চাই?’
প্রসঙ্গত, গতরাতে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে নিয়ে যাওয়ার সময় হাসপাতালের সামনেই আতিক আহমেদকে মাথায় গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। পুলিস সামনে থাকলেও কিছুই করতে পারেনি। আতিককে মারার পরই তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ভাই আশরাফকেও গুলি করে দুষ্কৃতীরা। পুলিস সূত্রে খবর, আতিককে গুলি করে খুন করার ঘটনায় অভিযুক্তদের নাম হল সানি, লাভলেশ এবং অরুণ। প্রতক্ষদর্শীদের দাবি, আতিক ও আশরাফকে গুলি করার পর সানি, লাভলেশরা ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানও দেয়।
আগের দিনই আতিকের ছেলে আসাদ আহমেদের মৃত্যু হয় এনকাউন্টারে। ছেলের শেষযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য আতিক আবেদন জানালেও তাঁকে ছাড়া হয়নি। এই আবহে গতকাল প্রায় রাত ১০টা নাগাদ আতিককে প্রয়াগরাজের এক সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য। সেখানেই গাড়ি থেকে নামার পর আতিককে ঘিরে ধরেছিলেন সাংবাদিকরা।
হত্যার সময় তাঁর ছেলের শেষযাত্রা না যেতে পারা নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছিল আতিককে। প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও কয়েক পা যাওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে শুরু করেছিলেন আতিক। কিছু কথা বলার পরই হঠাৎই আতিকের বাঁদিক থেকে একটি বন্দুকধারী এসে মাথায় ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে’ গুলি করে তাঁকে। রক্তাক্ত হয়ে সেখানেই লুটিয়ে পড়েন তিনি।