বাংলাহান্ট ডেস্কঃ করোনা মোকাবিলায় ব্রহ্মাস্ত্র হয়ে উঠে পারে অশ্বগন্ধা। তারই ইঙ্গিত দিল দিল্লি (Delhi) আইআইটি। করোনার প্রতিষেধক বা ওষুধের জন্য যখন গোটা বিশ্ব লড়ছে তখন দিল্লি আইআইটির এই গবেষণা আলোর দিশা দেখাল। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বায়োকেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগ জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (National Institute of Advanced Industrial Science and Technology) সঙ্গে যৌথভাবে দুটি জিনিস নিয়ে গবেষণা চালায়। এক অশ্বগন্ধা ও দুই, প্রোপোলিস। প্রথমটি ভেষজ, আর দ্বিতীয়টি মৌমাছির মৌচাকে উৎপাদিত মোম। সেই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে সম্প্রতি। যা আশার আলো দেখিয়েছে বিজ্ঞানীদের।
করোনা যুদ্ধে ব্রহ্মাস্ত্র হতে পারে অশ্বগন্ধা, দিল্লি আইআইটির গবেষণায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
দিল্লি আইআইটির তরফে যে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে জানানো হয়েছে, অশ্বগন্ধার মধ্যে উইথানল নামে এক প্রকার কেমিক্যাল থাকে। সেটি করোনা ভাইরাসের এনজাইমের বংশবিস্তার রোধ করে। অর্থাৎ প্রাণঘাতী করোনা যে এনজাইমের জোরে মানবদেহের মধ্যে বংশবিস্তার ঘটায়, সেটিকেই আটকে দেয় উইথানোন। ফলে বংশবিস্তার করতে না পারার কারণে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জোরেই ভাইরাসের বিনাশ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এই উইথানোনে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন (Hydroxychloroquine) বা ওই জাতীয় ড্রাগের মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। মানবদেহে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অত্যল্প। যার ফলে এটি করোনা রোগীদের স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাবও খুব একটা পড়বে না। করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই এনজাইম অন্যতম অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
দিল্লি আইআইির বায়োকেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডি সুন্দর জানিয়েছেন, হাজার হাজার বছর ধরে ভারতে আয়ুর্বেদের চর্চা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত প্রাকৃতিক ওষুধের সম্পূর্ণ মেকানিজম আয়ত্তে আসেনি। ভারত ও জাপান এনিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে বলে জানান তিনি। এই গবেষণা নিয়ে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক সুস্মিতা বেরা জানিয়েছেন, অশ্বগন্ধার অনেক উপকারিতা রয়েছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে অশ্বগন্ধা। ব্যথা ও জ্বর কমানোর ওষুধ হিসেবেও এই ভেষজ অব্যর্থ। এছাড়া উদ্বেগ কমাতে ও রক্তে লোহিত কণিকা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে অশ্বগন্ধা। তাই করোনা রোধের ক্ষেত্রেও যে এই ভেষজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে, তা অকল্পনীয় নয়।
গবেষকদের দাবি, মানুশের শরীরে এই রাসায়নিকের তেমন কোনও বিরূপ প্রভাব নেই। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয় নেই বললেই চলে! দিল্লি আইআইটির গবেষকদের আশা, করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার এই রাসায়নিক অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে অশ্বগন্ধা। তাই ভারতে আয়ুর্বেদের শাস্ত্রে জ্বর-জ্বালা কমানোর পাশাপাশি একাধিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধার প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। করোনাভাইরাস রুখতেও ‘অব্যর্থ দাওয়াই’ হতে পারে এই অশ্বগন্ধা! এমনটাই মনে করছেন গবেষকরা।
সম্পর্কিত খবর