বাংলাহান্ট ডেস্ক: কথায় আছে, ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। বিলাসবহুল বিদেশি গাড়ি কেনার সামর্থ সকলের থাকে না। কিন্তু অসমের নুরুল হক থেমে থাকেননি। না, সামান্য গাড়ি সারাইয়ের কাজ করে বিলাসবহুল বিদেশি কেনার সামর্থ হয়নি তাঁর। তাই নিজেই বানিয়ে ফেলেছেন আপাদমস্তক বিদেশি একটি স্পোর্টস কার। তা বলে বিদেশি কোনও গাড়ির কোম্পানি তাঁকে গাড়ি তৈরির বরাত দেয়নি। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে বানিয়ে ফেলেছেন একটি আস্ত স্পোর্টস কার।
বলা হয়, ভারতীয়রা জোগাড় করে জিনিস বানাতে পটু। তেমনই জোগাড় করে ইটালিয়ান বিলাসবহুল স্পোর্টস কার ল্যাম্বর্ঘিনির (Lamborghini) আদলে একটি গাড়ি বানিয়ে ফেললেন অসমের করিমগঞ্জ জেলার নুরুল হক। একটি পুরোনও মারুতি সুইফট গাড়িকেই মডিফাই করে তিনি এই গাড়িটি তৈরি করেছেন। এই গাড়িটি তৈরি করতে ১০ লক্ষ টাকার বেশি অর্থ খরচ হয়েছে নুরুলের।
Assam | I have modified a Maruti Swift into a model of Lamborghini for Assam CM Himanta Biswa Sarma. This took me 4 months to modify this. I always wanted to work on modifying cars, I have earlier worked in a garage for around 18 years: Nurul Haque, Car Mechanic
(02.12) pic.twitter.com/sKXkBZxDpj— ANI (@ANI) December 3, 2022
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে এটি উপহার দিতে গুয়াহাটি পৌঁছেছেন ৩১ বছর বয়সী এই মোটর মেকানিক। অসমের মুখ্যমন্ত্রীও নুরুলকে ফিরিয়ে দেননি। এর আগে শিলচরে নুরুলের সঙ্গে দেখা করেন হেমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma)। টুইট করে তিনি জানিয়েছিলেন সে কথা। সেই সময় নুরুলের তৈরি এই গাড়িটি চালিয়েও ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নুরুল তাঁকে এটি উপহার দিতে চান।
জানা গিয়েছে, হেমন্ত বিশ্বশর্মা নিজেই নুরুলকে এটি চালিয়ে গুয়াহাটি নিয়ে যেতে বলেন। এ বার থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি বা দফতরের বাইরে মডিফাই করা এই সুইফট গাড়ি দেখতে পাওয়া যেতে পারে। মারুতি সুইফটের ইঞ্জিন ও ট্রান্সমিশন এক রকম রেখে গাড়ির কার্বন ফাইবার শেলটি লোহার সঙ্গে পাল্টে ফেলেনে নুরুল। এছাড়াও ল্যাম্বর্ঘিনি গাড়ির ‘স্যিসার ডোর’ অর্থাৎ উপর দিকে খোলা দরজাও রেখেছেন তাঁর মডিফিকেশনে।
Wrapped up my day at Silchar with a walk from Itkhola to Circuit House along with our karyakartas. Happy to meet a lot of warm-hearted along the way.
Also had the thrill of being at the wheel of a 'Lamborghini' assembled by Nurul Haque, a car enthusiast from Karimganj. pic.twitter.com/7EMsG4MtbT
— Himanta Biswa Sarma (@himantabiswa) November 29, 2022
নুরুল হক বলেন, “এর আগে নাগাল্যান্ডের দিমাপুরে মোটর মেকানিকের কাজ করতাম। সেখানে গাড়ি মডিফাই করার কাজ শুরু করি। গত বছরও একটি গাড়িকে মডিফাই করে ল্যাম্বর্ঘিনির রূপ দিয়েছিলাম। তারপরে এই গাড়িটি তৈরি করি।” নুরুল আরও জানান, এই গাড়িটি তৈরি করতে প্রায় ৪ মাস সময় লেগেছে তাঁর।
এরপর মডিফাই করে ফেরারির আদলে একটি গাড়ি তৈরি করতে চান নুরুল। তিনি বলেন, “সরকার যদি সাহায্য করে তাহলে এমন আরও প্রকল্পে কাজ করতে চাই।” যদিও ভারতীয় মোটর আইন অনুযায়ী, গাড়ি সম্পূর্ণরূপে মডিফাই করা বেআইনি। এগুলিকে রাস্তায় চালাতে গেলে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়।
এরপর ফিটনেস টেস্টে পাশ করার পর আরটিও থেকে অনুমতিপত্র নিতে হয়। মডিফাই করা গাড়িতে কোনও রকমের ইন্স্যুরেন্স দেওয়া বেআইনি। তবে নুরুলের বানানো ল্যাম্বর্ঘিনি রাস্তায় চালানো বেআইনি হলেও একজন সাধারণ মোটর মেকানিকের অধ্যবসায় এবং দক্ষতা এবং সামগ্রিকভাবে দেশের চেতনার উদাহরণ দেয়।