‘আমার পাশের ব্যক্তিকে মাথায় গুলি করল’, হিন্দু ব্রাহ্মণ হয়েও কিভাবে বেঁচে ফিরলেন দেবাশিসবাবু? শুনলে শিউরে উঠবেন

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ধর্ম যাচাই করে বেছে বেছে গুলি! কয়েক মিনিটের হত্যালীলায় ‘নরকের’ রূপ নিয়েছে ভূস্বর্গ! কাশ্মীরের (Kashmir Attack) বুকে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। জলপাই রঙের পোশাক পরে সেনার বেশে পর্যটকদের কাছে এসেছিল ওরা, তারপর ধর্ম শুনেই নির্বিচারে চলে গুলি! দেবাশিসবাবুকে দেখেও তেড়ে এসেছিল বন্দুকধারীরা (Kashmir Terrorist Attack)। তবে শেষমেষ হিন্দু হয়েও প্রাণে বাঁচলেন অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক দেবাশিস ভট্টাচার্য।

কিভাবে বেঁচে ফিরলেন দেবাশিসবাবু? Kashmir Attack

নিউজ় ১৮-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেবাশিসবাবু সেই ভয়ঙ্কর মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন। চারিদিক থেকে ঘিরে ধরেছে জঙ্গিরা। তাঁর পাশে গাছের নীচে শুয়ে কয়েক জন কলমা পড়তে শুরু করেব। তাঁদের কাছ থেকে শুনে শুনে কলমা পাঠ করতে শুরু করেন দেবাশিসবাবুও। সেই কলমাই প্রাণ বাঁচাল অধ্যাপকের।

সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিঁনি বলেন, ‘পাশের গাছের তলায় দাঁড়িয়ে অনেকে বিড়বিড় করে কলমা পড়ছিলেন। আমি তাঁদের দেখাদেখি কলমা পড়তে শুরু করি। দেখছি এক জঙ্গি আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। আমার পাশে যিনি ছিলেন, তাঁর মাথায় গুলি করে ওই জঙ্গি। এরপর আসে আমার দিকে।’

দেবাশিসবাবু জানান, ‘আমাকে জিজ্ঞেস করল কী করছো?’ আমি আরও জোরে জোরে কলমা পড়তে শুরু করলাম। কী ভেবে আমি এটা করলাম আমি জানি না। কিন্তু এর পর ওই জঙ্গি আমার দিক থেকে সরে গেল।’’ দেবাশিসবাবু যোগ করেন, ‘‘আমি যে এখনও বেঁচে আছি, সেটাই আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।’’

প্রসঙ্গত, পহেলগাঁওয়ের বৈসারন ভ্যালির রিসর্টে অতর্কিত হামলার নেপথ্যে রয়েছে জঙ্গি সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা TRF (The Resistance Front)। হামলার দায় স্বীকার করে নিয়েছে পাক ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার সহযোগি সংগঠন TRF। জানা গিয়েছে ‘লস্কর-ই-তইবা’র (Lashkar-e-Taiba) ছত্রছায়ায় থাকা TRF হামলা চালানোর আগে প্রায় সাতদিন ধরে গোটা এলাকা রেইকি করে। তারপরই হয়ে আট্যাক।

বহুদিন ধরে কাশ্মীরে সক্রিয় থাকা এই জঙ্গি সংগঠন সকলকে বিভ্রান্ত করতে হামলার দিন জলপাই রঙের পোশাক পরে পর্যটকদের কাছে আসে। হাতে ছিল রাইফেল। জানা যাচ্ছে ঘোড়ায় চেপে ৬-৭ জন জঙ্গি রিসর্টে প্রবেশ করে। তারপর তারা একাধিক দলে ভাগ হয়ে ৫০ রাউন্ডের বেশি গুলি চালায়। অভিযোগ, ধর্ম দেখে ধর্মীয় পরিচয় যাচাই করে চালানো হয় হামলা।

এই জঙ্গি সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছে সাজিদ জাট, সাজ্জাদ গুল ও সালিম রেহমানি। সামাজিক মাধ্যমে এই সংগঠন নিজেদের প্রচার চালায় নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। বহুদিন ধরে তারা টার্গেট করে রেখেছিল পহেলগাঁওকে। এপ্রিলে পর্যটনের ভরা মরসুমে হামলার ছক কষা হয়।

আরও পড়ুন: কাশ্মীরের ঘটনায় নীরব, পাক নায়ককে নিয়ে ছবির প্রচার! বয়কটের ডাক বাণী কাপুরকে

২০১৯ সালে ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর, পাকিস্তানের আইএসআই-এর ছত্রছায়ায় TRF গঠিত হয় বলে খবর মিলেছে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ পহেলগাঁও হিল স্টেশন থেকে প্রায় ৫ কিমি দূরে বৈসরন উপত্যকায় ঢুকে জঙ্গিরা হামলা চালায়। মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। নিহতদের মধ্যে ২ জন বিদেশি নাগরিক রয়েছেন। প্রাণ হারিয়েছেন বাংলার তিন বাসিন্দা। আহত অন্তত ২০।

Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

X