বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ১৫ ই ফেব্রুয়ারীর রাতে হঠাৎ উজ্জ্বল এক বস্তু পৃথিবীর (Earth) দিকে ধেয়ে আসে এক আজব বস্তু, যা দেখতে অনেকটা চাঁদের (Moon) মতো। পৃথিবীকে আঘাত করতে নয়, তাঁকে আস্টেপৃস্টে জড়িয়ে ধরে সে। চাঁদের মতো দেখতে হলেও এ কিন্তু চাঁদ নয়। চাঁদের মতোই আবার পাক খাচ্ছে পৃথিবীরই চারপাশে। বৃহৎ চাঁদের মতো অতো বেশি জৌলুস আর অহঙ্কার না থাকলেও, তাকে ‘মিনিমুন’ বলছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা (Astronomer)।
অবজারভেটরি থেকে মহাশূন্যে চোখ রেখে এই মিনিমুনকে (Minimoon) আবিস্কার করেন মহাকাশবিদরা। পৃথিবীর দিকে ধেয়ে এসেও আঘাত না করে পৃথিবীকে জাপটে ধরে এই মিনিমুন। আর তারপর থেকেই পৃথিবীর সঙ্গেই একেবার আঠার মতো লেগে থেকে চাঁদের ন্যায় পৃথিবীকে প্রদক্ষিণও করে চলেছে। তাই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ভালোবেসে তার নাম দিয়েছেন ২০২০ সিডি৩ (2020 CD3)। আর এই নতুন চাঁদকে নিয়ে হইচই পড়ে গেছে নাসার (NASA) জ্যোতির্বিজ্ঞানী মহলে।
ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভের দুই জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্যাসপার ওয়ের্জকোস এবং থিওডোর প্রুনে সর্বপ্রথম এই মিনিমুনকে মহাকাশ পৃষ্ঠে আবিস্কার করেন। এই মিনিমুন প্রসঙ্গে ক্যাসপার বলেন, ‘এই ২০২০ সিডি৩ কোনও গ্রহ বা নক্ষত্র নয়। এটি আসলে ধূমকেতু (Comet) থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া আংশমাত্র। মহাকাশ পথে পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় অভিকর্ষজ বলের প্রভাবে আকৃষ্ট হয়ে পৃথিবীর উপরে চলে এসেছে। আর আগেও বহুবার এই ধরণের মহাজাগতিক বস্তু পৃথিবীর অভিকর্ষের টানে চলে এসেছিল, তবে এই মিনিমুনের পৃথিবীর প্রতি ভালোবাসা একটু বেশি। তাই সে পৃথিবীকে ঘিরেই চাঁদের মতো চড়কি পাক খাচ্ছে। তবে এই মিনিমুন কতদিন পৃথিবীর সঙ্গে জুড়ে থাকবে সেই বিষয়টি নিয়েও ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। কারণ এই ধরনের মহাজাগতিক বস্তুরা স্থায়ীভাবে কোন কিছুর সঙ্গে থাক না, সময় হলেই তাঁরা আবার চলে যায়’।
মঙ্গলবার স্মিথসন অ্যাস্ট্রোফিডিক্যাল অবজারভেটরির মাইনর প্ল্যানেট সেন্টার এই ‘আর্থ-অবজেক্ট’-এর কথা সবার সামনে আনেন। সেখানকার বিজ্ঞানীদের মতে, এই মহাজাগতিক বস্তুটি একটি ছোটখাটো গাড়ির মতো, যার পরিধি ৬.২ ফুট থেকে ১১.৪ ফুট। যেহেতু পৃথিবীর কক্ষপথের সঙ্গে এর কক্ষপথ মিলে গেছে, তাই সে পৃথিবীকে আকড়ে ধরেই ঘুরছে। ২০০৬ সালে পৃথিবীর কক্ষে এমনই এক ক্ষণিক বস্তু আরএইচ১২০ দেখা গিয়েছিল। পৃথিবীর টানে ছুটে এসে কিছুদিন পাক খেয়ে আবার সে অন্যত্র চলে যায়।