বাংলার পাহাড়ি সুর বাজল সুইজারল্যান্ডের উৎসবে, আল্পসের কোলে ইতিহাস গড়ল কালিম্পংয়ের স্কুল

বাংলাহান্ট ডেস্ক : এ যেন আস্ত রূপকথা। পৃথিবীর স্বর্গে গড়ে ওঠা এক রূপকথার গল্প। যে গল্পে রাজা নেই ,রানী নেই, নেই সৈন্য সামন্ত, আছে কিছু ক্ষুদ্র স্কুল পড়ুয়া। এমনকি সেই পড়ুয়ারাও বিশ্বাস করতে পারছেন না এ হেন অভিজ্ঞতা! যে সংসারে দুই বেলা ভাত জোগাড় করা দায় সেই সংসারের ছেলে ১৭ বছর বয়সী শুভম ছেত্রী এখন রয়েছে “পৃথিবীর স্বর্গ” সুইজারল্যান্ডে। আল্পস পাহাড়ের কোলে নিজের স্কুলের হয়ে পাইপ ব্যান্ড বাজিয়ে মন জয় করে নিচ্ছেন শ্রোতাদের। সৃষ্টি করছেন নতুন ইতিহাস। এমন ইতিহাস যা রূপকথাতেই শোনা যায়।

একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়ার সাক্ষাৎকারে শুভম শুনিয়েছেন তার অভিজ্ঞতার কথা। ইতিহাস সৃষ্টির সেই গল্প। পশ্চিমবঙ্গের কালিম্পং জেলার একটি সরকারি মাধ্যম স্কুল কুমুদিনী হোমস। সেই স্কুলের ২১ জন সদস্যকে নিয়ে গড়ে ওঠা ব্যান্ড দলের সুইজারল্যান্ডের পারফরমেন্স যেন এক ইতিহাস ছোঁয়ার গল্প। সুইজারল্যান্ডের বাসেল শহরে বিশ্বে বিখ্যাত সেনা ব্যান্ড গুলির সাথে মঞ্চ ভাগ করে নেওয়া তাদের কাছে নিঃসন্দেহে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

কালিম্পংয়ের নকদারা গ্রামের বাসিন্দা শুভম ছেত্রী। তার বাবা পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। শুভম সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি এখনো গায়ে চিমটি কেটে দেখছেন এটা সত্যি নাকি স্বপ্ন। শুভমের বাবা জানিয়েছেন,”আমরা খুবই গরীব। ছেলে যে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠান করছে তা আমাদের কাছে খুবই গর্বের। ক্লাস সেভেন থেকে ব্যান্ডের সঙ্গে গান বাজনা শিখত। বিদেশে যাওয়ার সময় আমার জমানো কিছু টাকা থেকে ওকে একটা ট্রলিব্যাগ আর হাতে কিছু নগদ দিতে পেরেছি। শুভমকে দেখে এখন অনেকেই বাজনা শিখতে চাইছে”।

Swiss fest

শুভমের সাথেই তার দলের বাকি ২১ জন সদস্যেরও উত্তেজনার পারদ চড়ছে। তারা যে সুইজারল্যান্ডে এসে পারফর্ম করছেন এ তাদের বিশ্বাসই হচ্ছে না। উল্লেখ্য, সারা পৃথিবীতে সামরিক বাহিনীর কিছু অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। রয়েল এডিনবার্গ মিলিটারি ইভেন্টের পর সুইজারল্যান্ড এর এই অনুষ্ঠান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম। এই অনুষ্ঠানে পৃথিবীর বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মিলিটারি ব্যান্ড পারফর্ম করে থাকে। প্রথম ভারতীয় হিসেবে এই অনুষ্ঠানে যোগদান করল কালিম্পং এর এই ব্যান্ডটি। প্রথম ভারতীয় ব্যান্ড হিসেবে ইতিহাস তৈরি করল খুদে কিশোরের দল।

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর