বাংলা হান্ট ডেস্কঃ জীবনে চলার পথে বাঁধা যতই আসুক না কেন, নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকলে, যে বাঁধাই সহজ হয়ে যায়। এই বিষয়টা আবার সত্য প্রমাণিত হল। প্রমাণ করে দিল মারাঠওয়াড়ার শেলগাঁও-র আনসার শেখ। বাবা পেশায় অটোরিকশা চালক এবং মা একজন কৃষি শ্রমিক। সাংসারিক জীবনের প্রতিকূলকে অতিক্রম করে আজকের দিনে সে দেশের অন্যতম কনিষ্ঠ IAS অফিসার হিসাবে নিজের সাফল্য অর্জন করেছেন।
ছোট থেকে রুজিরুটির জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে আনসার শেখকে। তাঁদের এলাকা খরাপ্রবণ হওয়ায় চাষের কাজেও নানা সমস্যা দেখা দিত। আবার এসবের মধ্যে তাঁর বাবা প্রতিদিন রাতে মদ্যপান করে বাড়ি ফিরতেন এবং নানভাবে অশান্তিও করতেন। এসবের মধ্যে থেকেও আনসার উপলব্ধি করেছিলেন, তাঁকে জীবনে কিছু করে দেখাতে হবে এবং সাফল্য লাভ করতেই হবে।
মারাঠি মাধ্যমে পড়াশুনা করার কারণে ইংরেজিতে কিছুটা কাঁচা ছিলেন আনসার। কিন্তু তা সত্ত্বেও সে হার মানেনি। সকল বাঁধাকে জয় করে নিজের জীবনে এই সাফল্য লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন আনসার শেখ। মাত্র ২১ বছর বয়সেই প্রথম প্রচেষ্টাতেই দেশের অন্যতম কনিষ্ঠ IAS অফিসার হিসাবে প্রমাণ করতে পেরেছেন।
নিজের এই সাফল্যের বিষয়ে আনসার জানান, ‘যখন আমি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি, তখন আমাদের আত্মীয়রা আমার পড়াশুনা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য বাবাকে চাপ দিত। সেই কারণে শিক্ষকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতেন বাবা। এরপর বাবাকে সকলে বোঝায়, তোমার সন্তানের মধ্যে ধরে রাখার ক্ষমতা আছে, ও জীবনে সফল হবে। আর তারপর থেকে বাবা আমাকে পড়াশুনা ছেড়ে দেওয়ার জন্য কোনদিন জোর করেনি’।
তিনি আরও বলেন, ‘স্কুলে পড়াকালীন খাবার খারাপ হলেও মিড-ডে মিলের খাবারই ছিল ক্ষুদা নিবারণের একমাত্র পথ। এরপর দাদ্বশ শ্রেণিতে ৯১ শতাংশ নম্বর পেয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর গ্রামের মানুষ আমায় বেশ সম্মানের চোখে দেখতে শুরু করে। এরপর কলেজের প্রথম বর্ষে পদার্পণ করে ইউপিএসসি পরীক্ষা সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করি। এরপর সেইদিকেই বেশি আগ্রহ দিই এবং ২০১৫ সালে ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর, আমার স্বপ্ন সত্যি হয়’।