প্রবল ইচ্ছাশক্তির জের! ৫৩ বছর বয়সে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন মা, সাহায্য করলেন মেয়েরা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: কথায় আছে “ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়”। অর্থাৎ, কোনোকিছু করার ক্ষেত্রে সদিচ্ছা থাকলে তাতে অবশ্যই সফল হওয়া যায়। এমনকি, পড়াশোনার (Study) ক্ষেত্রেও এই আপ্তবাক্য প্রযোজ্য। আর তাই তো জ্ঞান অর্জনের ইচ্ছে থাকলেই তা যে কোনো সময়ে অর্জিত করা যায়। এমনিতেই, অনেকেই থাকেন যাঁরা বাড়ির চাপে কিংবা অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল হওয়ার কারণে বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারেন না। যদিও, তাঁদের মধ্যে ইচ্ছে থাকে প্রবল।

এমতাবস্থায়, তাঁদেরকে অনুপ্রাণিত করতেই আমরা এমন একজনের প্রসঙ্গ বর্তমান প্রতিবেদনে উপস্থাপিত করব যিনি ৫৩ বছর বয়সে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তাঁর স্বপ্নপূরণ করেছেন। মূলত, আজ আমরা শীলা রানী দাসের কথা আপনাদের জানাবো। যিনি নিজের ইচ্ছাশক্তির জেরে দশম শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছেন। শুধু তাই নয়, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, তিনি উঠে এসেছেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতেও।

মা-মেয়েরা একইসাথে বোর্ড পরীক্ষায় পাশ করেছেন: জানা গিয়েছে, ত্রিপুরায় বসবাসকারী শীলা রানী দাস চলতি বছর দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। পাশাপাশি, তাঁর দুই মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা পাশ করেছেন। সম্প্রতি ত্রিপুরা মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (টিবিএসই) পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করে। সেখানেই শীলার সফলতার বিষয়টি সামনে আসে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যায় শীলা রানী দাসের। যদিও, তিনি পড়াশোনার প্রতি অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন। এদিকে, তাঁর বিয়ের কয়েক বছর পরই শীলার স্বামী মারা যান। যে কারণে, দুই মেয়েকে লালন-পালনের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর কাঁধে। এমতাবস্থায়, তিনি দিনরাত পরিশ্রম করে তাঁর কন্যাদের বড় করে তোলেন এবং তাঁদের সুশিক্ষার ব্যবস্থাও করেন। আর সেই কারণেই তিনি চাইলেও আর পড়াশোনা করতে পারেন নি।

shila rani das

এমন পরিস্থিতিতে শীলার মেয়েরা তাঁকে প্রভূত সাহায্য করে তাঁর স্বপ্নপূরণের সাহায্য নেন। যার ভিত্তিতে শীলা দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় বসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। শুধু তাই নয়, শীলা অভয়নগর স্মৃতি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতেও শুরু করেন। আর এভাবেই, ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়ে তিনি সফলতার সাথে পাশ করতে সক্ষম হন। এদিকে, মায়ের এই বিরাট সাফল্যে তাঁর মেয়েরাও খুব খুশি হয়েছেন। জানা গিয়েছে, শীলা এখন দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর