বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীজির (Atal Bihari Vajpayee) জন্ম বার্ষিকী। অটল বিহারী বাজপেয়ী দেশের এমন এক নেতা ছিলেন, যে ওনার প্রশংসা শুধু ওনার সমর্থকরাই করত না। ওনার প্রশংসায় ওনার বিরোধীরাও পঞ্চমুখ ছিলেন। আমাদের দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসানোর পিছনেও ওনার অনেক সহযোগ ছিল।
অনেক কম মানুষেই জানে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জীবনের একটি সময়ে রাজনৈতিক জীবন এবং সাংসারিক জীবনকে পিছনে রেখে অজ্ঞাতবাসে চলে গেছিলেন। এটা শোনা যায় যে, মোদীজি ওই সময় আমেরিকায় থেকে পড়াশুনা করতেন, আর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তখন আমেরিকার সফরে গেছিলেন। যখন অটলজি জানলেন যে নরেন্দ্র মোদী অজ্ঞাতবাসে আমেরিকায় আছেন, তখন উনি নরেন্দ্র মোদীকে ডেকে বললেন, ‘এরকম পালিয়ে বেরালে কাজ চলবে না, কতদিন এখানে থাকবে? দিল্লি এসো”
প্রবীণ সাংবাদিক বিজয় ত্রিবেদীর লেখা বই ‘হার নহি মানুঙ্গা – অটল এক জীবন গাঁথা” এর ১২ নম্বর অধ্যায়ে এই ঘটনার বর্ণনা দেওয়া আছে। ওই বই অনুযায়ী অটলজির সাথে নরেন্দ্র মোদীর আমারিকায় দেখা হওয়ার কদিন পরেই মোদীজি দিল্লি চলে আসেন। তারপর ওনাকে দিল্লির বিজেপির পুরানো অশোক রোড অফিসে একটি কামরা দিয়ে সংগঠনকে মজবুত করার দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই সময় মোদীজির অফিসে আসবাবপত্র বলতে একটি টেবিল আর দুটি চেয়ার রাখা ছিল মাত্র।
অক্টোবর ২০০১ এর একদিনের সকালে মোদীজি এক সহকর্মীর শেষকৃত্যের জন্য দিল্লির এক শ্মশান ঘাটে উপস্থিত ছিলেন। আর সেই সময় অটলজি ফোন করে মোদীজিকে নিজের কাছে ডাকেন। সেই সময় বিজেপিতে প্রমোদ মহাজন, অরুন জেটলি আর সুষমা স্বরাজের বিশাল গুরুত্ব ছিল। সেই সময় গুজরাটের রাজনীতিতে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কেশুভাই প্যাটেল এর সাথে প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীজির বনিবনা চলছিল। কারণ গুজরাটে তখন কেশুভাই এর পরিবারবাদ এর রাজনীতির জন্য ওনার জনপ্রিয়তা কমছিল।
২০০০ এ বিজেপি আহমেদাবাদ আর রাজকোট পৌরসভা নির্বাচনে হেরে গেছিল, আর এর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল কেশুভাই এর অক্ষমতা। ২০ সেপ্টেম্বর ২০০১ এ বিজেপি আহমেদাবাদ, এলিসব্রিজ আর সাবরকান্ঠা বিধানসভায় হেরে যায়। এলিসব্রিজ বিধানসভা বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আদবানীজির লোকসভা সিট গান্ধীনগরের অন্তর্গত ছিল। পার্টি হাইকমান তখন চিন্তা করে দেখল যে এরকম চলতে থাকলে ২০০৩ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয় নিশ্চিত।
আর সেই ভেবেই মুখ্যমন্ত্রী কেশুভাইকে পদ থেকে সরানোর চিন্তা ভাবনা করে তাঁরা। ৭ অক্টোবর ২০০১ এ অটলজির ইচ্ছায় গুজরাটের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হন নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী। আর সেখান থেকেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ওনার দরজা খুলে যায়।