বাংলা হান্ট ডেস্ক : সামান্য টাঙ্গাওয়ালার সন্তান থেকে অন্ধকার দুনিয়া রাজত্ব করা। সেখান থেকে বিধায়ক, নেহরুর লোকসভা আসন থেকে জিতে সাংসদ হয়েছিল গ্যাংস্টার আতিক আহমেদ (Atiq Ahmed)। সেই গ্যাংস্টারকে সবরমতী জেল থেকে উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) ফেরানো হয় উমেশ পাল মার্ডার কেসে। সেইসময় সংবাদমাধ্যমেও আতিক বলেছিলেন, এই সরকারের উদ্দেশ্য আমার কাছে স্পষ্ট। এরা আমাকে খুন করতে চায়। শনিবার প্রয়াগরাজে খুনই হয়ে গেলেন আতিক আহমেদ।
তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশ্যে এক অজানা তথ্য। একবার কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সরকারকে গভীর সংকট থেকে থেকে রক্ষা করেন আতিক আহমেদ। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় ইউপিএ সরকার। প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন মনমোহন সিং। আমেরিকার সঙ্গে নিউক্লিয়ার চুক্তি নিয়ে তুলকালাম শুরু হল গোটা দেশে। এই চুক্তির চরম বিরোধিতা করে সিপিএম। সেবার ৪৩টি আসন জিতে ইউপিএ জোট সরকারকে সাহায্য করেছিল বামেরা। কিন্তু নিউক্লিয়ার চুক্তি নিয়ে মতবিরোধের জেরে সমর্থন তুলে নেয় বাম। অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় কংগ্রেস সরকারে।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের ত্রাতা হয়ে দাঁড়ায় মুলায়ম সিং যাদবের সমাজবাদী পার্টি। সেবার সপা জিতেছিল ৩৬ টি আসন। ইউপিএ-র দখলে ছিল ২২৮টি আসন। এরপরও আরও ৮টি আসনের দরকার ইউপিএ জোটের। উপায়ন্তর না দেখে ৪৮ ঘন্টার নোটিশে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয় আতিক আহমেদ সহ ৬ অপরাধীকে। তারা বাইরে এসেই ভোট দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে ইউপিএ সরকার।
মোট পাঁচ বারের বিধায়ক, একসম নেহরু-বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিতের কেন্দ্র ফুলপুরের সাংদস যোগি সরকারের চক্ষুশূল হয়ে গেলেন কীভাবে?রাজনৈতিক মহলের ধারনা কখনও সপা, কখনও আপনা দল করে নিজের শত্রু বাড়িয়েছিলেন আতিক। তবে কোনও কোনও মহল থেকে এমনও বলা হয়ে প্রধানমন্ত্রী বিরুদ্ধে বারাণসী থেকে ভোটে দাঁড়ানোকেও ভালো ভাবে নেয়নি যোগি সরকার। এবছর ২৪ ফেব্রুয়ারি খুন হন উমেশ পাল। সাংসদ হওয়ার পর তাঁর সেই আসনে লড়াই করেন আকিকের ভাই খালিদ আজিম । কিন্তু তাকে হারিয়ে দেন বিএসপি টিকিটে লড়া রাজু পাল।
সেই রাজু পাল খুন হন ২০০৫ সাল। সেই রাজু পাল খুনে প্রধান সাক্ষী ছিলেন আইনজবী উমেশ পাল। এবছর ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি খুন হন। এই উমেশকে ২০০৬ সালে অপহরণ করে মিথ্যে সাক্ষী দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। ওই ঘটনার পর বিধানসভায় যোগী আদিত্যনাথ বলেছিলেন, এই বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলছি, এই মাফিয়াকে মাটিতে মিশিয়ে দেব। এখনও পর্য়ন্ত ওই মামলায় জড়িত ৮ জনের মৃত্যু হল। এদের মধ্যে আতিকের ছেলেও ছিল।