বাংলাহান্ট ডেস্কঃ রবিবার ১৪ বছর আগের ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে পুলিশি অভিযানের জন্য নাম না করে শিশির ও শুভেন্দু অধিকারীকে দায়ী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) । তারপরই সোমবার রাজ্যের প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya) একটি লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করে নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুর-কে এখন শ্বশানের নীরবতা বলে উল্লেখ করেছিলেন। আর আজ ফের বাম শিবিরের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে বুদ্ধবাবুর অডিও বার্তা (Audio Message of Buddhadeb) প্রকাশ করল দল। এদিনের অডিও বার্তায় বাংলার শান্তি-শৃঙ্খলা বজিয়ে রেখে রাজ্যকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে জোটের প্রার্থীদের জেতানোর আহ্বান জানান তিনি।
প্রাক্তণ এই মুখ্যমন্ত্রীর গলায় সেই আগের মত গাম্ভীর্য আর নেই। অসুস্থতার কারণে অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে গিয়েছে গলার স্বর। এদিনের অডিও বার্তায় বুদ্ধবাবু জানান, ‘ বাংলার রাজনীতিতে (West Bengal Politics) এ এক সন্ধিক্ষণ৷ বাম আমলে আমরা স্লোগান দিয়েছিলাম, কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ৷ এই নীতি নিয়ে আমরা এগিয়েছি৷ কৃষিতে যেমন সাফল্য এসেছিল, তেমনই শিল্পে প্রসার ঘটতে শুরু করেছিল৷ বামফ্রন্ট অপসারিত হওয়ার পর তৃণমূল সরকারের (TMC Govt) আমলে রাজ্যজুড়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে৷’ তিনি এও বলেন, এখন ‘সমস্ত ক্ষেত্রেই নেমে এসেছে হতাশা৷ একদিকে কৃষকের সঙ্কট, কৃষিজাত পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া হয়েছে৷’
https://www.facebook.com/100010318575982/videos/1408026346217971/
অন্যদিকে বাংলায় শিল্প নিয়ে তিনি জানান, ‘এ রাজ্যে শিল্প, শিল্পায়ন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে৷ গত দশ বছরে রাজ্যে উল্লেখযোগ্য কোনও শিল্প আসেনি৷ সিঙ্গুর- নন্দীগ্রামে এখন শ্মশানের নীরবতা৷’ তিনি বাংলার মহিলা ও যুব সম্প্রদায়কে নিয়ে জানান, ‘নিরাপত্তা ভয়ঙ্কর ভাবে বিঘ্নিত৷ যুব সম্প্রদায় আশাহীন, উদ্যোগহীন৷ চাকরির (Job) সন্ধানে অনেকে রাজ্য ছাড়ছে৷ এই পরিস্থিতি চলতে পারে না৷’
এর পাশাপাশি সংযুক্ত মোর্চাকে ভোট দিয়ে জেতানোর আহ্বানে তিনি বলেন, ‘একদিকে তৃণমূলের স্বৈরতান্ত্রিক নৈরাজ্য অন্যদিকে বিজেপির (BJP) আগ্রাসন রাজ্যে যেমন বিপদের পরিবেশ তৈরি করেছে তেমনি এনে দিয়েছে এক সম্ভাবনা। বামফ্রন্ট কংগ্রেস ও একটি ধর্মনিরপেক্ষ দল একটি মঞ্চ তৈরি করেছে এই নির্বাচনে লড়াই করার জন্য’।
উল্লেখ্য, ‘দল যেখানে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে প্রচার চালাচ্ছেন, তখন নিজেকে ঘরের মধ্যে বন্দী করে রাখাটা আমার কাছে মানসিক যন্ত্রণা’। এমনটাই বলেছিলেন বুদ্ধবাবু। তারপরই রাজ্যে তৃণমূল সরকার গঠনের ভরকেন্দ্র নন্দীগ্রামের নির্বাচন প্রাক্কালেই একেরপর এক নীরবতা ভেঙে মুখ খুলে চলেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।