কোহলিদের বড় মঞ্চে খেলা শেখালেন স্মিথরা! ভারতকে বিশাল ব্যবধানে উড়িয়ে WTC জয় অস্ট্রেলিয়ার

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ বড় মঞ্চে কিভাবে জ্বলে উঠতে হয় সেটা বিরাট কোহলিদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন স্টিভ স্মিথরা। দলের প্রত্যেক তারকা ক্রিকেটার সময়মতো জ্বলে উঠলেন। ক্রিকেটপ্রেমীরা অস্ট্রেলিয়া দলে উসমান খাওয়াজা ছাড়া আর কাউকে দেখাতে পারবেন না যিনি ভারতের বিরুদ্ধে এই গুরুত্বপূর্ণ ফাইনালে ম্যাচের কোনও না কোনও অংশে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রাখেননি। অপরদিকে ভারতীয় দল নির্দিষ্ট কয়েকজনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। ফলে যা হওয়ার ঠিক তেমনটাই হলো। ভারতকে ফাইনালে পরজদুস্ত করে নিজেদের প্রথম বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে নিলেন কামিন্সরা। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আসন্ন অ্যাশেজের আগে এই জয় তাদের বাড়তে আত্মবিশ্বাস জোগাবে।

অথচ ৭ই জুন এই ম্যাচের আরম্ভে টস জিতেছিলেন রোহিত শর্মা। তিনি প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং ম্যাচের প্রথম সেশনে দুই ওপেনারকে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া চাপেও পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু স্টিভ স্মিথ এবং ট্র্যাভিস হেড প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশন থেকে যে রিংটোন সেট করে দেন, গোটা ম্যাচে ঠিক সেভাবেই দাপট দেখিয়ে খেলে অস্ট্রেলিয়া।

তাদের দুজনের প্রথম ইনিংসে করা শতরানের পর বোলারদের সামগ্রিক দুর্দান্ত পারফরম‍্যান্স তাদের ১৭৩ রানের লিড নিতে সাহায্য করে। রাহানে আর শার্দূল রুখে না দাঁড়ালে আরও বড় হতে পারত। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া যখন তাদের প্রথম ইনিংসের দুই নায়ককে তাড়াতাড়ি হারিয়ে ফেলেন জাদেজার হাতে, তখন রুখে দাঁড়ান অস্ট্রেলিয়ার উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি।

স্টার্কের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়ে অজিতের ভারতের সামনে ৪৪৪ রানের টার্গেট রাখতে সাহায্য করেন তিনি। এখানেও ভারতকে ভালো শুরু করতে দেখে ঘাবড়ে যাননি অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর উইকেট তুলে তুলে ভারতের ওপর সমানে চাপ বজায় রাখেন তারা।

kohli out wtc

মিচেল স্টার্ক এই গোটা ম্যাচে খুব একটা ভালো ছন্দে ছিলেন না। কিন্তু ২ ইনিংসেই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে দলকে জয় পেতে সাহায্য করেন। রোহিত শর্মাকে দ্বিতীয় ইনিংসে আউট করে ভারতের পতনের শুরুটা করেছিলেন লিয়ন। তিনি ভারতীয় লোয়ার অর্ডারকে ভেঙে অস্ট্রেলিয়াকে ২১০ রানের ব্যবধানে জয় পেতে সাহায্য করেন। ২ ইনিংসেই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলেছেন অজি অধিনায়ক কামিন্সও। তবে এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলারের খেতাবটা দেওয়া যায় বোল্যান্ডকে। সেই সঙ্গে অলরাউন্ডার গ্রিনও ব্যাট এবং বল হাতে সামান্য হলেও যোগদান রেখেছেন দলের জয়ে।

ভারতের তরফ থেকে শেষ দিনে নায়ক হয়ে ওঠার সুযোগ ছিল বিরাট কোহলি ও অজিঙ্কা রাহানের সামনে। কিন্তু দুজনেই দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো নিজেদের উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসেন। শুভমন গিল আইপিএলে এবং দেশের মাটিতে দুর্বল শ্রীলংকা এবং দ্বিতীয় সারির নিউজিল্যান্ড দলের বিরুদ্ধে যতটা মারাত্মক ছিলেন, এই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ছিলেন ততটাই অসহায়। রোহিত শর্মাকে নিয়ে আলাদা করে আর কথা খরচ করতে চাইছেন না কেউই। কাউন্টি ক্রিকেট খেলে নিজেকে এই টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুত করা পূজারাও সম্পূর্ণ ব্যর্থ। সিরাজ ও শামি নিজেদের কাজটা করেছেন কিন্তু কোনও সাহায্য পাননি তেমনভাবে বাকি বোলারদের কাছ থেকে। শ্রীকর ভরত ব্যাট হাতে একেবারেই দাগ কাটতে পারেননি। জাদেজা ভালো খেললেও গুরুত্বপূর্ণ সময় রুখে দাঁড়াতে পারলেন না। ফলে ফাইনালে যে ফলাফলটা প্রত্যাশিত ছিল প্রথম দিনের পর এমনটাই হয়েছে।

 


Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর