বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এদিন হলদিয়ায় শ্রমিক সমাবেশে উপস্থিত হন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসভার প্রথম থেকেই এদিন কড়া মেজাজে দেখা যায় অভিষেককে। নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করার পাশাপাশি বিচার ব্যবস্থাকেও বেনজির ভাবে আক্রমণ শানান তৃণমূল নেতা, যারপরেই এদিন তাঁর সমালোচনায় সরব হয়েছে রাজনৈতিক মহল।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে এসএসসি দুর্নীতি থেকে শুরু করে কয়লা পাচার কাণ্ডে একের পর এক মামলায় সিবিআইকে তদন্তের ভার দিয়ে চলেছে কলকাতা হাইকোর্ট, যা নিয়ে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ রয়েছে তৃণমূল শিবির। এদিন অভিষেকের গলাতেও সেই একই সুর শোনা যায়। তিনি বলেন, “লজ্জা লাগলেও এটা বলতে হবে যে, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে আমাদের বিচার ব্যবস্থায় 1% এমন মানুষ রয়েছেন, যারা তল্পিবাহকের কাজ করে চলেছেন। প্রত্যেকটি মামলাতেই তারা সিবিআইকে দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। খুনের মামলায় স্থগিতাদেশ দিচ্ছে। আপনারাই বলুন, আদালত খুব বেশি হলে নিরাপত্তা দিতে পারে। কিন্তু স্থগিতাদেশ কেন দেওয়া হবে। তবে আমি ভয় পাই না, এই কথা বলার জন্য যদি আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাও আমি পিছিয়ে যাব না, কারণ সত্যি বলতে আমার বিবেকে বাধে না।”
অভিষেকের এই মন্তব্যের পরে স্বভাবতই তোলপাড় পড়ে যায় বঙ্গ রাজনীতিতে। সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “সিঁদুরে মেঘ দেখে বর্তমানে ভয় পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল দল আর স্বাভাবিকভাবেই সেই দলে সামিল রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এসব বলছেন।” কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর মতে, “যদি আদালত শাসক দলের পক্ষে রায় দেয়, তাহলে তারা ভালো আর বিপক্ষে রায় দিলেই তাদের আক্রমণ করতে হবে। এটাই হল তৃণমূল দলের আসল মানসিকতা।”
উল্লেখ্য, অতীতে বগটুই অগ্নিকাণ্ড থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এসএসসি দুর্নীতি মামলায় শাসকদলের বিরুদ্ধে রায় দেয় আদালত। প্রতিটি মামলায় সিবিআইকে তদন্তের ভার দেওয়া থেকে আরম্ভ করে তারা যেসব রায় দিয়েছে, তাতে সরকারের পিঠ ক্রমশ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। সম্প্রতি, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়েকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়; যা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় গোটা রাজ্যে আর এই পরিস্থিতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য বিতর্ক যে আরো বৃদ্ধি করবে, তা বলা বাহুল্য।