বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সমীক্ষা করে যোগ্য উপভোক্তাদের নাম চূড়ান্ত করার পর আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের মোট ১২ লক্ষ্য উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো সবকিছুই হয়েছে অত্যন্ত দ্রুত।
আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) অজানা নিয়ম
নিয়ম অনুযায়ী প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে বাড়ি তৈরির কাজে অগ্রগতির উপর নির্ভর করেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাবেন উপভোক্তারা। যদিও এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ উপভোক্তাদেরই আবাস যোজনা (Awas Yojana) প্রকল্পে বাড়ি তৈরির নিয়মাবলী এবং নকশা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেই। এরফলে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধি কিংবা শাসকদলের নেতাদের বলা নিয়মের উপর ভিত্তি করেই উপভোক্তাদের একাংশ ঘরে তৈরি করা শুরু করে দিয়েছেন। কেউ পুরনো খুঁটি দেওয়া বাড়ির বেড়া সরিয়ে সেখানেই কংক্রিটের ব্যান্ড দিয়ে ইঁটের দেওয়াল তুলছেন। কেউ আবার আবাসের টাকায় পাকা মেঝে বানিয়ে নিচ্ছেন, আবার কেউ পুরনো বাড়ির পাশেই আগাম রান্না ঘর তৈরি করে নিচ্ছেন।
অতীতের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই দুর্নীতি ঠেকাতে উপভোক্তাদের কোন প্রভাবশালীর সাহায্য না নিয়ে নিজেদেরই বাড়ি তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যেই অনেকেই এই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আবাস প্রকল্পে (Awas Yojana) বাড়ি তৈরি করার জন্য জারি করা হয়েছে ১৬ দফার নিয়ম। জারি হয়েছে কাজের বিবরণ এবং খরচের সরকারি নির্দেশিকা। সেইসাথে বলা হয়েছে আবাস প্রকল্পে তৈরি হওয়া বাড়ির আয়তন ২৬৯ বর্গফুট হওয়া আবশ্যক।
এতকিছুর পরে একটা ফাঁক থেকেই গিয়েছে। তাই তো, আবাস প্রকল্পে (Awas Yojana) কোন নিয়মে বাড়ি তৈরি করতে হবে তা নিয়ে উপভোক্তাদের জন্য কোন শিবির করা হয়নি। যার ফলে অনেকেই নিজের মতো করে বাড়ি তৈরি করার চেষ্টা করছেন। কোথাও কোথাও আবার অভিযোগ করা হচ্ছে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধি এবং শাসকদলের নেতাদের কথা মত বাড়ি তৈরি করছেন উপভোক্তারা।
এমনই একজন উপভোক্তা শাসকদলের পঞ্চায়েত প্রতিনিধির কথা শুনে পুরনো খুঁটি দেওয়া ঘরেই ইঁটের দেওয়াল তুলে মেঝে ঢালাই করেছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী উপভোক্তাদের মাটির নীচ থেকে কলাম তুলতে হবে। কলাম মাটির উপরে ওঠার পর তার ওপর কংক্রিটের ব্যান্ড তৈরি করতে হবে। যদিও কিছু ক্ষেত্রে উপভোক্তারা কলাম না তুলে তাদের কংক্রিটের খুঁটি দেওয়া বাড়ির বাঁশের দেওয়াল সরিয়ে দিয়ে সেই ঘরেই ইঁটের দেওয়াল তুলে ঢালাই করছেন।
আরও পড়ুন: এক ক্লিকেই সমস্ত পরিষেবা! বাড়ি বসেই পাওয়া যাবে সার্টিফিকেট, নতুন অ্যাপ লঞ্চ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার
অন্যদিকে সঠিক নিয়ম মেনে বাড়ি তৈরি না করলে আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) পরবর্তী দফার টাকা পেতে সমস্যা হবে উপভোক্তাদেরই। প্রথম দফায় বাড়ি তৈরির কাজ অর্থাৎ ভীত থেকে লিন্টন পর্যন্ত হওয়ার পর তা দেখেই উপভক্তদের পরের দফার ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এই বিষয়ে এগরার মহাকুমা শাসক জানিয়েছেন,’বাড়ি তৈরির কাজ পরিদর্শনে থাকা কর্মীদের বাড়ি তৈরির সঠিক তথ্য প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে,নিয়ম বহির্ভূত পদ্ধতিতে বাড়ি তৈরি করা হলে বাড়ি তৈরির বাকি টাকা দেওয়া হবে না।’
অভিযোগ বিভিন্ন পঞ্চায়েত অঞ্চলে শাসকদলের একাংশ নিজেদের মতো করে বাড়ি তৈরির যে উপায় বলে দিচ্ছেন,তা মানলে বিপদে পড়বেন উপভোক্তারাই। তাই এ ব্যাপারে পটাশপুর-২ পঞ্চায়েত সভাপতি স্বপন মাইতি জানিয়েছেন,’অনেক জায়গায় স্থানীয় নেতৃত্বরা উপভোক্তাদের নানাভাবে বাড়ি তৈরী করতে বলছেন। উপভোক্তারা না বুঝে অন্যের কথায় নিয়ম বহির্ভূত উপায়ে বাড়ি তৈরি করলে সমস্যায় পড়বেন।’