বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্য সরকারকে গ্রামীণ আবাস যোজনা (Awas Yojna) প্রকল্পে টাকা দেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারপর অবশ্য নিজস্ব কোষাগার থেকে টাকা দিয়েই এই প্রকল্পের নতুন তালিকা তৈরি সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এরই মধ্যে এই আবাস যোজনার (Awas Yojna) দুর্নীতির জেরেই অকালে প্রাণ হারালেন এক নিরীহ ব্যক্তি।
আবাস প্রকল্পে (Awas Yojna) কাটমানি নিয়ে প্রতারণা! পিটিয়ে ‘খুন’
আবাস যোজনায় (Awas Yojna) সরকারি টাকায় বাড়ি তৈরী করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে টাকা নিয়েছিল মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের মুকুন্দপুর এলাকার তৃণমূল নেতা আব্দুল লতিফ ওরফে মিঠুন। পরে তালিকার নাম না আসায় ঐ ব্যক্তি টাকা ফেরার চাইতে গেলে তাকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠছে।এইভাবে নিরীহ গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের মুকুন্দপুর এলাকায়।
প্রতিবাদের টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। জানা যাচ্ছে,রঘুনাথগঞ্জের মুকুন্দপুর এলাকার বাসিন্দা ওই মৃত ব্যক্তির নাম আতিউর শেখ ওরফে কালু। বছর চারেক আগে ২০১৮ সালের আবাস যোজনার সমীক্ষা সময় তালিকায় নাম তুলে দেওয়ার জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতা আব্দুল লতিফকে ওরফে মিঠুনকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু নতুন তালিকা আসতেই দেখা যায় সেখানে নাম নেই তার। তাই তিনি শনিবার সেই টাকা ফেরার চাইতে গিয়েছিলেন। এরপরেই তৃণমূল নেতার সাথে ওই ব্যক্তির কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে যায়। এক-কথা দু-কথায় ব্যাপক বচসা শুরু হয়ে যায় তাদের। পরিস্থিতি গড়ায় হাতাহাতির পর্যায়ে। কালুকে ব্যাপক মারধর করেন ওই ব্যক্তি।
মারের চোটে কান থেকে রক্ত বেরোনো শুরু হয়ে যায় তার। এরপর ওই আক্রান্ত ব্যক্তিকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখান থেকে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিকেলে। সেখানেও অবস্থার ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করে। তখন কালুবাবুকে তড়িঘড়ি নিয়ে আসা হয় কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে। রবিবার সেখানেই মৃত্যু হয় তার। আর মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষজন।
আরও পড়ুন: যুবতীকে নগ্ন করে ভিডিও ভাইরাল! এক বছর সহবাস, সিভিকের কাণ্ডে শোরগোল
রাস্তার মধ্যেই টায়ার চালিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। পাশাপাশি কংগ্রেস ও সিপিএম-ও পথে নাম। মৃত ব্যক্তির বৌদির অভিযোগ, ‘আবাসের ঘরের জন্য টাকা নিয়েছিলেন তৃণমূলের মিঠুন। তালিকায় নাম না থাকায় সেই টাকাই ফেরত আনতে যান কালু। সেই সময় তাঁকে মারধর করেন তিনি।’
অন্যদিকে অপর এক স্থানীয় বাসিন্দার দাবি, ‘গতবারের সমীক্ষার সময় তৃণমূলের প্রাক্তন নেতৃত্ব বাসিন্দার থেকে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু অনেকেরই নাম আসেনি। উলটে নেতার আত্মীয়দের নাম রয়েছে। আমরা কিছু বলতে গেলে ভয় দেখানো হচ্ছে। মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক।’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েতের সদস্য সেতাবুল ইসলাম। তাঁর দাবি,’ঘটনাটি ঘটেছে এটা সত্যি। তবে যিনি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তিনি তৃণমূলের কেউ নন।’