এক সপ্তাহ না খেয়ে পায়ে হেঁটে ফুড ডেলিভারি করছেন B.Tech পাশ যুবক! নেটিজেনরা এইভাবে করলেন সাহায্য

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে দিন যত এগোচ্ছে ততই বাড়ছে অনলাইনে খাবার অর্ডার (Online Food Order) করার প্রবণতা। যার ফলে নিজের পছন্দের খাবার খুব সহজেই কয়েক মুহূর্তের মধ্যে এসে উপস্থিত হয় একদম দোরগোড়ায়। আর সেই খাবারগুলি যাঁরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছে দেন তাঁরা হলেন ডেলিভারি ম্যান। রোদ-ঝড়-বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই তাঁরা পৌঁছে দেন খাবার। এমনকি, এই সংক্রান্ত ভিডিও বহুবার ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social Media)।

তবে, এবার এমন একটি বিষয়ের প্রসঙ্গ সামনে এসেছে যেটি জানার পর রীতিমতো অবাক হয়ে যাবেন সকলে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, সম্প্রতি “ফ্ল্যাশ” নামের একটি টেক কোম্পানির মার্কেটিং ম্যানেজার প্রিয়াংশী চান্ডেল জনপ্রিয় ফুড ডেলিভারি মাধ্যম সুইগি থেকে একটি আইসক্রিম অর্ডার করেছিলেন।

এমতাবস্থায়, আইসক্রিম অর্ডার করার পর তিনি অপেক্ষা করতে থাকেন। যদিও, সেই অর্ডারটি আসতে বেশ খানিকটা দেরি হয়। এমনকি, দেখা যায় যে, যিনি ওই অর্ডারটি নিয়ে এসেছিলেন তিনি রীতিমতো হাঁফাচ্ছিলেন। এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবেই প্রিয়াংশী ওই ডেলিভারি ম্যানকে হাঁফাতে দেখে তাঁর দেরির কারণ জানতে চেয়েছিলেন। আর তারপরেই প্রিয়াংশী যা জেনেছিলেন তাতে অবাক হয়ে যান তিনি। শুধু তাই নয়, সমগ্ৰ বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন লিঙ্কডইনে। যা তুমুল গতিতে ছড়িয়ে পড়ে।

জানা গিয়েছে, ওই ডেলিভারি ম্যানের নাম সাহিল সিং। তিনি বি.টেক গ্র্যাজুয়েট। মূলত, সাহিল হলেন কাশ্মীরের বাসিন্দা। কাজ হারানোর পরে তিনি ডেলিভারি ম্যান হিসেবে নতুন কাজ শুরু করেছিলেন। পাশাপাশি, সাহিল প্রিয়াংশীকে জানান যে, তাঁর কাছে কোনো স্কুটি না থাকায় তিনি তিন কিমি হেঁটে এসেছিলেন। এমনকি, তাঁর কাছে কোনো টাকাও ছিল না।

সাহিল বলেন, “আমার ফ্ল্যাটমেট শেষ টাকাটাও নিয়ে নিয়েছে। এখন আমার ২৩৫ টাকা ধার রয়েছে। ভাড়া দেওয়ার টাকাটুকুও নেই। এই ডেলিভারি দিয়ে আমি ২০ থেকে ২৫ টাকা পাব। ১২ টার মধ্যে আমাকে আর একটা ডেলিভারি করতে হবে। আমি এক সপ্তাহ ধরে শুধু জল আর চা খেয়ে আছি। আমি শুধু একটা কাজ চাই। আর কিছু চাই না। আগে আমি ২৫ হাজার টাকা আয় করতাম। কিন্তু, এখন বাবা মায়ের কাছ থেকে টাকা চাইতে পারি না। তাঁদেরও বয়স হয়েছে।”

সাহিল জানান, এর আগে তিনি বাইজু ও নিনজাকার্টে কাজ করতেন। এদিকে, সাহিলের জীবনসংগ্রামের এহেন কাহিনি সম্পর্কে জানতে পেরে প্রিয়াংশী তাঁকে জল খাওয়ান এবং ৫০০ টাকা দেন। শুধু তাই নয়, সাহিলের ছবি, বায়োডাটা সহ যাবতীয় বিররণ লিঙ্কডইন মারফত সবার কাছে তুলে ধরেন প্রিয়াংশী। পাশাপাশি, তিনি আবেদন জানান সাহিলের জন্য কোনো কাজের সন্ধান থাকলে তা জানাতে।

whatsapp image 2023 06 18 at 2.37.11 pm (1)

এরপরই প্রিয়াংশীর ওই পোস্টটি তুমুল শেয়ার করতে থাকেন নেটিজেনরা। পাশাপাশি সাহিলের জন্য কাজের সন্ধানের পরিপ্রেক্ষিতে আসতে থাকে থাকে একের পর এক কমেন্ট। শেষ পর্যন্ত প্রিয়াংশী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সাহিলের কাজ পাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেন। আর এইভাবেই নেটমাধ্যমের ওপর ভর করে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করলেন সাহিল।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর