তৃণমূলের শুভেন্দুকেই দলনেতা করতে হল বিজেপিকে! হাস্যকর তকমা দিয়ে কটাক্ষ বাবুলের

বাংলাহান্ট ডেস্ক : রাজনীতি যে কী বিষম বস্তু, তা বাংলার মানুষ গত বছর দুয়েকে বেশ টের পেয়েছে। কথায় বলে কাকে কাকের মাংস খায় না। কিন্তু রাজনীতিতে..? একটা সময় একই দলের নেতা ছিলেন দুজন। গলায় গলায় বন্ধুত্বও ছিল, এমনকি দুজনের জন্ম সাল তারিখটা অবধি এক। কিন্তু মাঝখানে এসে পড়ল ‘রাজনীতি’। সেই কারণেই বোধহয় নিজে দলবদলু হয়েও তৃণমূল ছাড়া প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) খোঁচা দিতে কোনও অসুবিধাই হল না বাবুল সুপ্রিয়র (Babul Supriyo)। ‘আপনি আচরি ধর্ম অপরে শিখায়’, কিন্তু রাজনীতি যে সত্যিই বড়ই বিচিত্র !
শনিবার বালিগঞ্জে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার সারছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। এদিন এই প্রচারের মঞ্চ থেকেই নানা কথায় তিনি সাংবাদিকদের জানান, ‘বিজেপির অবস্থা হাস্যকর। আর লোক খুঁজে পেলো না। তৃণমূল থেকে আসা শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা করতে হয়েছে।’অথচ ভিতরের খবরটা যদিও কিঞ্চিৎ অন্যরকম। সদ্য একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরিয়েছে তখন। বাংলায় ভরাডুবির পর মুখ লুকোনোর জায়গা খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি। টালিগঞ্জে বিজেপির টিকিটে হেরেছেন খোদ বাবুলও। কিন্তু তখনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তিনি।
সূত্রের খবর, সেই সময় তিনি নাকি নিজে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে বলেছিলেন বাংলায় যদি বিজেপিকে বাঁচাতেই হয় তাহলে একমাত্র উপায় শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা এবং রাজ্য সভাপতি দুটি পদেরই দায়িত্ব দেওয়া। ততদিনে যে দিলীপ ঘোষ এবং তাঁর অনুগামীদের উপর ভরসা তলানিতে এসে ঠেকেছে বাবুলের তা বলাই বাহুল্য। এহেন সুপারিশের পরও অবশ্য রাজ্য সভাপতির পদ মেলেনি বাবুলের তৎকালীন গলায় গলায় বন্ধু শুভেন্দুর। তবে তাঁকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা ঘোষণা করে গেরুয়া শিবির।
এককালে নিজেই যাঁর হয়ে সুপারিশ করতে গিয়েছিলেন, আজ ঠিক সেই ইস্যুতেই তাঁকে বিঁধছেন বর্তমান তৃণমূল নেতা। তার মানে কি বাবুল ঘুরিয়ে নিজেকেই নিজে বিঁধলেন না? বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয় এবং তৃণমূল নেতা বাবুল সুপ্রিয় যেন সত্যিই দুই মেরুর দুই মানুষ। ঠিক কতখানি তফাত সেদিনে আর আজকে?
babul supriyo
যদিও বিশ্লেষকদের একাংশের মতে রাজনীতিতে রভাবে কিছুই বলা যায় না। রাজনীতিতে সব কিছুই স্বাভাবিক। সব কিছুই। তাই আজ যে গেরুয়া কাল সে সবুজ, আজ যে ঘাসফুলে কাল হঠাৎ পদ্ম হাতে দেখা যেতেই পারে তাকে, আজ যে লাক ঝান্ডা হাতে আগামীকালই হয়ত তাকে দেখা যাবে সবুজ পতাকার তলায়। ঠিক যেমনটি হয়েছে বাবুল কিংবা শুভেন্দুর ক্ষেত্রে। সম্ভাবনার এই খেলায় ঠিক ভুল বলে কিছুই নেই।
উল্লেখ্য,  বাবুল সুপ্রিয়র মন্তব্যকে ঘিরে অবশ্য তাঁকেও একহাত নিয়েছে বিজেপি। রাজ্যের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ বলেন, ‘তৃণমূলের দশা তো আরই হাস্যকর। ২১৩ পার করার পরও বিজেপি ছেড়ে আসা নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রীসভা থেকে ছেঁটে দেওয়া নেতাকেও মালা পরিয়ে দলে নিতে হচ্ছে। প্রার্থী করতে হচ্ছে। বালিগঞ্জে কি আর লোক ছিল না?’ স্বভাবতই, রাজনীতির এই ময়দানে যে ‘খেলা জমে উঠেছে’ তা বোধহয় আর বলার অবধি রাখে না।
ad

Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর