বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission) সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় সম্প্রতি ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। বর্তমানে এ ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে আর এর মাঝে বিতর্ক আরো বাড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেস মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন শোভন-বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় (Baisakhi Banerjee)। একসময় সতীর্থ পার্থর বিরুদ্ধে বৈশাখীর দাবি, “পার্থদার পতনের পিছনে ওর অহংবোধ রয়েছে। উনি বলতেন, শিক্ষা দফতরটা নাকি হরিশ মুখার্জি স্ট্রিটের বদলে নাকতলা থেকে চলবে।”
উল্লেখ্য, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর গত শনিবার সকালে ইডির হাতে গ্রেফতার হন তৃণমূল কংগ্রেস মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অপরদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের অধ্যাপক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদে নিযুক্ত ছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। একদা পার্থ ঘনিষ্ঠ সেই শোভন বান্ধবীর কথায়, “এই পার্থদাকে অচেনা লাগছে। অর্থের জন্য রাজনীতি করতে মানা করেছিল আমাকে।” এরপরেই বৈশাখীর সংযোজন, “দুর্নীতি বন্ধ করার ব্যাপারে ওকে বারংবার বলেছিলাম, কিন্তু শোনেনি। বরং দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদেরই পুরস্কৃত করেছিলেন।”
এদিন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় উঠে আসে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অহংকারের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “ওর পতনের পিছনে অহংবোধ কাজ করেছে। মাঝেমধ্যেই বলতো যে, মমতার পরেই নাকি ওর স্থান। বেপরোয়া হওয়ার জন্যই আজ এই পরিস্থিতি। এক সময় স্কুল সার্ভিস কমিশনের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হলে অন্যান্য শিক্ষা আধিকারিকরা এসে আমার ওপর দায়িত্ব দিতে মানা পর্যন্ত করে।” উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলায় সারদা-নারদা মামলা ক্রমশ শিরোনামে থেকে এসেছে। এমনকি নারদা মামলায় একসময় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হতে হয় বৈশাখীর ‘বিশেষ’ বন্ধু শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আর এবার অপর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডির হাতে গ্রেফতার হলেন পার্থ।
এই প্রসঙ্গে এদিন বৈশাখী বলেন, “নারদা মামলায় শোভনের টাকা নেওয়ার ব্যাপারটা ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু এখানে যে টাকার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, তা মানুষের চোখের জলে ভরা।” এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসাই শোনা যায় বৈশাখীর গলায়।
তিনি জানান, “শোভন আমাকে একবার বলেছিল যে, দিদি কখনো চুরি করতে বলবে না। তবে আমার অনেক আগে থেকেই মনে হয় যে, পার্থদার দুর্নীতি ক্রমশ ঘনিয়ে আসছে, ক্ষমতার ঔদ্ধত্যর জন্যই আজ তাঁর এই পরিস্থিতি হয়েছে।” ফলে বর্তমানে এসএসসি মামলায় যখন উত্তপ্ত বাংলা, সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বৈশাখীর একের পর এক মন্তব্য পার্থকে আরো অস্বস্তিতে ফেলবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।