বাংলাহান্ট ডেস্ক : পাক সেনা অভ্যুত্থানের জেরে ভয়াবহ অবস্থা বালুচিস্তানে। দাউদাউ করে জ্বলছে বিদ্রোহের আগুন। পাক সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে বিগত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত বালোচিস্তান। কমপক্ষে ১৭০ পাক সেনাকে নিকেশ করা হয়েছে, এবার এমনটাই দাবি করল বিদ্রোহীরা।
বিগত বুধবার থেকে ভয়াবহ আকার নিয়ে বালুচিস্তানের যুদ্ধ পরিস্থিতি। পাক সেনার সঙ্গে স্বাধীনতার দাবিতে চলছে বালোচ বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই। বুধবারই বিদ্রোহীরা বালুচিস্তানের পঞ্জগুর জেলায় পাকিস্তানি সেনার দুটি ক্যাম্পে আক্রমন করে। এবার এই যুদ্ধে মোট ১৭০ জন সেনাকে নিকেশ করেছে বলেই দাবি করল বালোচ লিবারেশন আর্মি।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই স্বাধীনতা সংগ্রাম চালাচ্ছে বালুচিস্তানিরা। এরই মধ্যে গতমাসে একজোট হয়েছে দুই বিদ্রোহী দল বালুচিস্তান রিপাবলিক আর্মি এবং ইউনাইটেড বালোচ আর্মি। এরপর আরও শক্তি বাড়িয়ে জোরদার হয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আক্রমন। বালুচিস্তানে বহুদিন ধরেই অকথ্য অত্যাচার চালিয়ে আসছে পাকিস্তান। গুমখুন, ধর্ষণ সেখানে নিত্যদিনের ঘটনা। এভাবেই বিদ্রোহীদের দমানোর চেষ্টা করলেও ফল হয়নি কিছুই।
চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর তৈরি হওয়ার পর থেকেই বালুচিস্তানে অত্যাচার আরও বাড়ায় ইসলামাবাদ। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ প্রদেশটিকে দীর্ঘদিন ধরে লুঠ করা হলেও বদলে বালুচিস্তানবাসীদের অত্যাচার এবং দারিদ্র ছাড়া আর কিছুই ফেরত দেয়নি ইমরান খানের সরকার। এহেন পরিস্থিতিতে জীবনপণ লড়াইতে নামে বালুচিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। গত সপ্তাতেই ১০ জন পাকিস্তানি সেনাকে নিকেশ করে তারা। এখনও অবধি মোট ১৭০ জন পাক সেনাকে খতম করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বালুচিস্তানের বিদ্রোহী সংগঠন।
চিন এবং পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক করিডর তৈরির কাজ চলছে। পাকিস্তানের গদর পোর্ট থেকে চিনের শিনজিং প্রদেশ অবধি প্রায় ২০০০ কিলোমিটার লম্বা রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। এই করিডরটি নিয়ে প্রথম থেকেই ক্ষুদ্ধ ছিলেন বালুচিস্তান, গিলগিট, বালতিস্তান এবং পিওকের নাগরিকরা। তাঁদের অভিযোগ অন্যায়ভাবে অত্যাচার চালিয়ে তাঁদের বাসভূমি কেড়ে নিয়ে চিনের মদতে এই রাস্তা বানাচ্ছে পাকিস্তান। সেই বিদ্রোহের আগুন ক্রমেই দাউদাউ করে জ্বলে উঠেছে বালুচিস্তানে। আপাতত জীবন পণ করেই মুক্তিযুদ্ধে নেমেছে সেই প্রদেশের মানুষজন।