বাংলাদেশের “আত্মঘাতী” পদক্ষেপ! ভারত থেকে এই জিনিসের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ইউনূস সরকারের

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, বাংলাদেশের (Bangladesh) ন্যাশনাল বোর্ড অফ রেভিনিউ (NBR) তাৎক্ষণিকভাবে ভারত থেকে সুতো আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে, বেনাপোল, ভোমারা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা এবং বুড়িমারীর মতো প্রধান স্থলবন্দর দিয়ে আর সুতো আমদানির অনুমতি থাকবে না। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (BTMA) অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে যে, ভারত থেকে সস্তা সুতো আমদানি স্থানীয় টেক্সটাইল শিল্পের জন্য বিশাল ক্ষতির কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশ (Bangladesh):

এই সিদ্ধান্তের কারণ এবং এর প্রভাব: BTMA বলছে, ভারত থেকে স্থলপথে আমদানি করা সুতোর দাম সমুদ্রপথে আসা সুতোর তুলনায় অনেক কম। যার কারণে স্থানীয় মিলগুলি প্রতিযোগিতামূলক অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে ৩০ টি সিঙ্গেল সুতোর দাম প্রতি কেজি ৩.৪০ ডলার। যেখানে ভারতে এই দাম ২.৯০ ডলার এবং ভিয়েতনামে ২.৯৬ ডলার। এদিকে, BTMA আরও অভিযোগ করেছে যে স্থলবন্দরগুলিতে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো এবং চেকিংয়ের সুবিধার অভাবের কারণে আমদানিকারীরা মিথ্যে ঘোষণার মাধ্যমে কর ফাঁকি দিচ্ছেন।

তবে, বাংলাদেশি পোশাক রফতানিকারীরা এই সিদ্ধান্তকে “আত্মঘাতী” বলে অভিহিত করেছেন। বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (BKMEA) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, এই পদক্ষেপ রেডিমেড পোশাক রফতানিকারীদের জন্য ব্যয় বৃদ্ধি করবে এবং ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগের (SMB) জন্য বাজারে প্রতিযোগিতা করা আরও কঠিন করে তুলবে। জানিয়ে রাখি যে, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ওই দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। এটি ভারত থেকে আমদানি করা সুতার প্রায় ৯৫ শতাংশের ওপর নির্ভরশীল। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ১.২৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন সুতো আমদানি করেছে। যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৩১.৫ শতাংশ বেশি।

 Bangladesh bans import of this item from India.

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের সাম্প্রতিক উত্তেজনা: এদিকে, ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য সম্পর্কের সাম্প্রতিক উত্তেজনার ধারাবাহিকতায় এই সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করা হয়েছে। সম্প্রতি, ভারত অন্যান্য দেশে বাংলাদেশের পণ্য রফতানির জন্য তার স্থল শুল্ক স্টেশনগুলির মাধ্যমে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে। এই প্রসঙ্গে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকেট মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, এই সুবিধাটি ভারতীয় বিমানবন্দর এবং বন্দরগুলিতে যানজট বৃদ্ধি করছে। যার ফলে ভারতের নিজস্ব রফতানিতে বিলম্ব এবং ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আরও পড়ুন: বারংবার কোচের সাথে “ঝামেলা”! সুপার কাপের নায়ক ক্লেটনের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল ইস্টবেঙ্গল

তাছাড়া, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মোহম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক বক্তব্য দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিকে “স্থলবেষ্টিত” অঞ্চল হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং চিনকে এই অঞ্চলে তার অর্থনৈতিক উপস্থিতি বৃদ্ধির জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এমনিতেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এই সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি করেছে।

আরও পড়ুন: ভারতে এই প্রথম! এবার ট্রেনে বসল ATM, যাত্রীদের সুবিধার্থে বড় চমক রেলের

ভারত ২০২৩-২৪ সালে বাংলাদেশে ১১ বিলিয়ন ডলারের রফতানি করেছে। যার মধ্যে রয়েছে সুতো, তুলা, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য এবং পেট্রোলিয়াম পণ্য। অপরদিকে, বাংলাদেশ থেকে ভারতের আমদানির পরিমাণ ছিল ১.৮ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং ডলারের ঘাটতির কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ভারতীয় রফতানিকারীরা অর্থ প্রদানে বিলম্বের সম্মুখীন হয়েছেন।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X