বাংলাহান্ট ডেস্ক : গেল হজ করতে। কিন্তু গিয়েই শুরু করে দেয় ভিক্ষা। ভিক্ষা করার অভিযোগে সৌদি আরবে গ্রেফতার হল এক বাংলাদেশি নাগরিক। খবরটি জানাজানি হতেই বাংলাদেশ হজ মিশনের আধিকারিকরা থানায় রীতিমতো মুচলেকা দিয়ে অভিযুক্তকে মুক্ত করেন। শুধু তাই নয়, ভিক্ষার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি একসময় বাংলাদেশের কুখ্যাত ডাকাত ছিল বলেই জানা যাচ্ছে। এই ঘটনায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলেই মনে করছে বাংলাদেশ।
কী অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়?
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, সৌদি আরবে হজ পালন করতে গিয়েছিলেন মহম্মদ মতিয়ার রহমান নামের এক বাংলাদেশি নাগরিক। কিন্তু সেখানে গিয়েই ভিক্ষা শুরু করেন তিনি। তারপরই ভিসার শর্ত ভঙ্গ হচ্ছে এই অভিযোগ করে তাকে গ্রেপ্তার করে সৌদি পুলিশ। প্রসঙ্গত সৌদিতে ভিক্ষা করা সম্পূর্ণ বেআইনি। ওই ব্যক্তি সৌদিতে গিয়ে ভিক্ষা করায় নষ্ট হয়েছে দেশের সম্মান। জানা যাচ্ছে, ওই হজযাত্রী সৌদিতে গিয়েছিলেন ধানসিঁড়ি ট্রাভেলস এয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে। এবার ওই হজ এজেন্সিকেই শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রক।
ওই মন্ত্রকের হজ-১ শাখার আধিকারিক আবুল কাশেম মহম্মদ শাহীন জানান, ‘শোকজ নোটিশে বলা হয়েছে, ধানসিঁড়ির ট্রাভেলসের পাঠানো মহম্মদ মতিয়ার রহমান নামে ওই ব্যক্তি ২২ জুন মদিনা শরিফে ভিক্ষা করছিলেন। সেই সময় সৌদি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনা জানার পর বাংলাদেশ হজ মিশনের একজন কর্মী থানায় মুচলেকা দিয়ে কোনও ভাবে তাকে ছাড়িয়ে আনেন। ওই যাত্রী সৌদি আরবে তাঁর ব্যাগ ছিনতাই হয়ে গিয়েছে বলে মিথ্যা নাটক করে লোকের কাছে ভিক্ষা করতেন। এই ঘটনায় সৌদির মাটিতে দেশের সম্মান নষ্ট হয়েছে বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। তদন্তে জানা যায়, ধানসিঁড়ির সেই হজযাত্রীকে রক্ষা করার মত কোনও ব্যক্তি বা বসবাসের জায়গা সৌদিতে
ছিল না।
মন্টু ডাকাত ভিখারি কিভাবে হলো?
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ধৃত মতিয়ার রহমান মেহেরপুরের বাসিন্দা। এলাকায় সে পরিচিত ‘মন্টু ডাকাত’ নামে। কয়েক বছর আগে একটি ডাকাতির করার সময় জনতার হাতে ধরা পরে যায় সে। উন্মত্ত জনতা মেরে তার দু’টি হাতই নষ্ট করে দেয়। তারপর থেকেই ডাকাতি ছেড়ে বিদেশে ভিক্ষা করা শুরু করে সে। ভিক্ষা করতে সৌদি আরব ছাড়া ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের বেশ কয়েকবার গিয়েছে সে। মতিয়ারের স্ত্রী জানান, সৌদি আরবে মতিয়ার ঠিক কী কাজ করতেন তিনি জানেন না। তবে শেষবার দেশে ফিরে প্রায় ১০ বিঘা জমি কেনে সে। তিনি আরও বলেন, “আমি জনতান না ওখানে ঠিক কী হচ্ছে। আমি আর ওকে সৌদি ফিরতে দেব না। আমাদের সন্তানদের বিয়ে দিতে হবে। গ্রামে সবাই আমাদের ঘৃণা করছে।’