বাংলাহান্ট ডেস্ক : গোটা বিশ্বের নজর এখন বাংলাদেশে (Bangladesh)। সে দেশে পতন হয়েছে হাসিনা সরকারের। শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) পদত্যাগের পর দেশের দায়িত্বভার তুলে নিয়েছে সেনা। গতকাল অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডক্টর ইউনুস। সেনার হাতে ক্ষমতা যাওয়ার পরেও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে একাধিক হিংসার ঘটনার খবর। সে দেশের সংবাদপত্র প্রথম আলো জানাচ্ছে, এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের (Bangladesh) অধিকাংশ থানা খোলা যায়নি। দেশে ব্যাপকভাবে চলছে ডাকাতি।
বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে কলকাতা ফেরার অভিজ্ঞতা গ্লোবাল ভিজিটিং প্রফেসরের
এই অবস্থায় বাংলাদেশে (Bangladesh) থাকা বিভিন্ন বিদেশী পর্যটকেরা দেশে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে কলকাতায় (Kolkata) সুরক্ষিতভাবে এসে পৌঁছেছেন অধ্যাপক, বিজ্ঞান অনুষদ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন, বাংলাদেশের গ্লোবাল ভিজিটিং প্রফেসর (Global Visiting Professor) ডঃ বিশ্ব প্রসূন চ্যাটার্জি। বাংলাদেশের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার কাজের জন্য গিয়েছিলেন বিশ্ব প্রসূন চ্যাটার্জি। সম্প্রতি একটি সংবাদপত্রে তিনি তার বাংলাদেশ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন।
আরোও পড়ুন : ১৭০ বছরের ইতিহাস! এই ‘বিশেষ’ জায়গাতেই তৈরি হয়েছিল হাওড়া স্টেশন! নেপথ্যে অবাক করা কাহিনী
বিশ্ব প্রসূন চ্যাটার্জি লিখেছেন, ১৭ ই জুলাই মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটা বৃদ্ধি পেলে সে দেশে শুরু হয় ছাত্রদের আন্দোলন। পুলিশের হামলায় প্রাণ হারায় কমপক্ষে আড়াইশো জন। সেই সময় ধীরে ধীরে বন্ধ হতে থাকে ইন্টারনেট। ভারতে ফোন করাও দুষ্কর হয়ে ওঠে। প্রশাসন আমাদের ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয় ১৮ তারিখ। দেশজুড়ে শুরু হয় কারফিউ। ১লা আগস্ট থেকে বাংলাদেশে শুরু হয় আইন অমান্য আন্দোলন। ২ তারিখ ব্যাপক সংঘর্ষের খবর আসতে থাকে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়, নিউমার্কেট, টাইগারপাস এলাকা থেকে।
আরোও পড়ুন : UPI পেমেন্ট নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক! এবার হবে মোটা টাকার লেনদেন
অধ্যাপকের কথায়, এরপর ৪ আগস্ট ক্রমশ পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে থাকে। গোটা দেশজুড়ে শুরু হয় অরাজকতা। হিন্দুদের উপর আক্রমণ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়ি আক্রমণ, এমনকি ঘটে গেছে বেশ কিছু নৃশংস খুনের ঘটনা। যেদিন ঢাকায় লংমার্চ ছিল সেদিন আমাদের দূতাবাস থেকে দেশ ছাড়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তারপর ৬ আগস্ট মঙ্গলবার ভোর ৪ টেয় অ্যাম্বুলেন্স করে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয় বিমানবন্দর। সেখানে চেক ইন করার পরও আমার মনে প্রশ্ন উঠেছিল, ‘ফ্লাইটটি না উঠলে কী হবে?’
বিশ্ব প্রসূন বাবুর কথায়, এটাই ছিল তার জীবনের সবথেকে ভয়ংকর ফ্লাইট। তাঁর বক্তব্য, ফ্লাইটটি কলকাতায় অবতরণ করার মুহুর্তে আমি আমার মনে স্বস্তির অনুভূতি অনুভব করলাম। কলকাতাকে এতটা ভালো লাগেনি আগে। আমি প্লেন করে আমার লাগেজ সংগ্রহ করলাম। কাস্টমস অফিসার এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এসে আমার সাথে কথা বলে আমার ভালোর কথা জিজ্ঞেস করে। তারা আমাকে বলেছিল, “কাস্টমস এ কোন লাগেজ চেক করতে হবে না, শুধু বাড়িতে গিয়ে ট্রমা থেকে সেরে উঠো”।