বাড়ছে ব্যয়, কমছে বৈদেশিক মুদ্রা! বাধ্য হয়ে করতে হচ্ছে লোডশেডিং! সংকটে বাংলাদেশের অর্থনীতি

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বেশ কিছু বছর ধরেই বিশ্ববাজারে মন্দার ছাপ স্পষ্ট। মন্দার প্রভাব আরো বিস্তার হয়েছে কোভিড লকডাউন ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর। এবার বাংলাদেশের (Bangladesh) অর্থনীতিতে কালো ছায়া পড়তে শুরু করছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। কিছুদিন আগেই ভারতের (India) শীর্ষ ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া (Reserve Bank Of India) বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দেশীয় মুদ্রার প্রচলন বৃদ্ধির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত সপ্তাহে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ঘোষণা করে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি বা দেশ থেকে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতীয় রুপি ব্যবহার করা যাবে। মূলত মজুত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর চাপ কমাতে ও রাশিয়ার সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সাম্প্রতিককালে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত নিজস্ব সমুদ্রে বাণিজ্য করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছিল। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে পশ্চিমা দেশগুলির রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞার কারণে নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য করার ব্যাপারটি আরো ত্বরান্বিত হয়।

এবার সেই পথে হাঁটতে চলেছে বাংলাদেশ। মূলত তারা কথা বলেছে রাশিয়ার সাথে। রুবেলের মাধ্যমে রাশিয়ার সাথে বাণিজ্য করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। তবে এ নিয়ে বিশেষ অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের মতো দেশের পক্ষে মার্কিন ডলার এড়িয়ে অন্য পন্থায় বাণিজ্য করা খুবই কঠিন কাজ। তাই বৈদেশিক মুদ্রার ভাড়ারে টান পড়লে দেশের একমাত্র পথ হবে আমদানি ব্যয় সংকোচ করা। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এমনই কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাদের মূল লক্ষ্যই হল যতটা সম্ভব আমদানি ব্যয় হ্রাস করা। তুলনামূলক অপ্রয়োজনীয় বা বিলাসবহুল দ্রব্য আমদানিক কম করা। কিন্তু এরপরেও গত অর্থ বৎসরের ১১ মাসে আমদানি ব্যয় ছাড়িয়েছে সাড়ে সাত হাজার কোটি ডলার। জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে চার হাজার কোটি ডলারে নেমে এসেছে বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ।

পাঁচ মাস হয়ে গেলেও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের শেষ কবে হবে বোঝা যাচ্ছে না। এদিকে যুদ্ধের ছেড়ে সারা বিশ্বেই বৃদ্ধি পাচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিম দেশগুলির কাছে আহ্বান জানিয়েছেন তারা যেন রাশিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় কারণ এর ফলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠছে। আমদানিজাত পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে এর ফলে লোডশেডিং করে দিতে হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়।

রুশ ইউক্রেন যুদ্ধের পাশাপাশি সাম্প্রতিককালে শ্রীলংকার অবস্থা বাংলাদেশকে আরো ভাবিয়ে তুলেছে। বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক ঋণ, মুদ্রাস্ফীতি বাংলাদেশের সরকারের কাছে এখন চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যান্য দেশগুলির মত বাংলাদেশও যে খুব একটা ভালো জায়গায় নেই তা স্পষ্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রীদের কথাতেই। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এইসব ঘটনা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে যে কোনো অশনি সংকেত দিচ্ছে তা বলাই যায়।


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর