বাংলা হান্ট ডেস্ক: দুই বাংলার কাঁটাতার টপকে এতদিন পর্যন্ত পাচারকারীরা গরু-মাদক-বাংলাদেশের-জামদানি কিম্বা জাল নোট পাচার করে এসেছে। তবে এবার সামনে এলো একেবারে অভিনব পাচার কাণ্ডের ঘটনা। মুর্শিদাবাদে (Murshidabad) ভোটপর্ব মিটতেই নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে একদল পাচারকারী (Smuggler)।
আর এবারের নতুন ট্রেন্ডে রয়েছে বাংলাদেশের (Bangladesh) গর্ভনিরোধক বড়ি ( Contraceptive Pills)। যা ওপার বাংলার কাঁটাতারের বেড়া টপকে পাচারকারীদের হাত ধরে এসে পৌঁছাচ্ছে বাংলায়। আর পরে তা হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের মহিলাদের কাছে। সূত্রের খবর এখন পর্যন্ত মুর্শিদাবাদের রানিতলা সীমান্তের টিকলিচর, আহমদিয়া, সুতি এবং লালবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট কুড়ি হাজার গর্ভনিরোধক ট্যাবলেটের পাতা উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা যাচ্ছে এই ট্যাবলেটের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড (বিজিবি)-কেও জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সূত্রের খবর, ওই দেশের পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রকের আওতায় থাকা বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালগুলিতে বিনামূল্যে ১০টি ট্যাবলেটের একটি পাতাযুক্ত গর্ভনিরোধক বড়ি দেওয়া হয়।
আশ্চর্য্য জনকভাবে সেই ওষুধই এবার পৌঁছে যাচ্ছে পাচারকারীদের হাতে। কিন্তু কীভাবে? এপ্রসঙ্গে বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের গোয়েন্দা আধিকারিকদের তরফে জানানো হয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকে বিনামূল্যে দেওয়া ওষুধগুলি সংগ্রহ করে পাচারকারীরা কাঁটাতারের ওপর থেকে এ দেশে ছুড়ে দেয়।
আরও পড়ুন: পাতে পড়বে না হিমসাগর! প্রিয় আম ছাড়াই এবার জামাইষষ্ঠী হবে বাংলার জামাইদের?
তখন সামনের ঘন জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা ভারতীয় পাচারকারীরা দ্রুত সেগুলি সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। ইতিমধ্যেই পাচারের আগে গোয়েন্দা বিভাগ বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে গর্ভনিরোধক ওষুধ বাজেয়াপ্ত করেছে। এপ্রসঙ্গে বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি এ কে আর্য বলেছেন,’ ওষুধের বাজারের কাজে যুক্ত সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনও অবস্থাতেই সীমান্তের কাঁটাতার এলাকাকে পাচারকারীদের ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।’
কিন্তু প্রশ্ন হল এই হঠাৎ বাংলাদেশ থেকে এই গর্ভনিরোধক বড়ি পাচারের কারণ কি? আসলে জানা যাচ্ছে ভারতে বর্তমানে যে কয়েকটি ব্র্যান্ডের গর্ভনিরোধক বড়ি পাওয়া যায় তার মূল্য ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে আসা এই গর্ভনিরোধক বড়ি গুলো মাত্র ২০-৩০ দামেই পেয়ে যান অধিকাংশ মহিলা। তাই এই ‘দামে কম মানে ভালো’ গর্ভনিরোধক বড়ি কিনতে দু’বার ভাবছেন না কেউই।