বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের “বিতর্কিত প্রতিক্রিয়ার” পরিপ্রেক্ষিতে এবার পদক্ষেপ গ্রহণ করল বাংলাদেশ (Bangladesh)। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, বাংলাদেশ সরকার গত মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলন বিধ্বস্ত বাংলাদেশের (Bangladesh) “অসহায় মানুষকে আশ্রয়” দেওয়ার বিষয়ে সাম্প্রতিক বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবাদ জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই পড়শি দেশ এই বিষয়ে নয়াদিল্লিতে একটি অফিসিয়াল নোট পাঠিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। বিষয়টির প্রসঙ্গে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী হাসান মাহমুদ স্পষ্ট জানিয়েছেন, “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তাঁর প্রতি যথাযথ সম্মানের সাথে আমরা এটি স্পষ্ট করতে চাই যে তাঁর মন্তব্যে বিভ্রান্তির অনেক সুযোগ রয়েছে। তাই, আমরা ভারত সরকারকে একটি নোট দিয়েছি।”
কড়া পদক্ষেপ বাংলাদেশের (Bangladesh):
কি বলেছিলেন মমতা: মূলত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, যদি হিংসাত্মক আন্দোলনে বিধ্বস্ত বাংলাদেশের (Bangladesh) মানুষ বাংলার দরজায় কড়া নাড়েন তাহলে তিনি তাঁদের আশ্রয় দেবেন। তিনি আরও বলেন, মানুষ বাধ্য হয়ে বাংলায় এলে তাঁদের জায়গা দেওয়া হবে এবং থাকতে দেওয়া হবে। এরজন্য, মুখ্যমন্ত্রী জাতিসংঘের নীতিরও উল্লেখ করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে যে কোনও প্রতিবেশী দেশ শরণার্থীদের সম্মান করবে।
শহিদ দিবসের সমাবেশে দেওয়া বক্তব্য: গত ২১ জুলাই শহিদ দিবসের সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “বাংলাদেশ (Bangladesh) নিয়ে আমি বেশি কিছু বলব না। কারণ এটি অন্য দেশ। কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরবে। কিন্তু অসহায় মানুষ (বাংলাদেশ থেকে) যদি বাংলার দরজায় কড়া নাড়ে, তাহলে আমরা তাঁদের আশ্রয় দেব।”
আরও পড়ুন: হার্দিক না পসন্দ! গোটা দল সূর্যকেই চেয়েছিল অধিনায়ক, সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
রিপোর্ট চেয়েছেন রাজ্যপাল: এদিকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের গভর্নর সিভি আনন্দ বোস মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে তাঁর মন্তব্যে রিপোর্ট চেয়েছেন। পাশাপাশি, এই প্রসঙ্গে রাজভবন জানিয়েছে যে, বহিরাগত বিষয়গুলির সাথে সম্পর্কিত যে কোনও কিছু পরিচালনা করা কেন্দ্রের এখতিয়ার। গভর্নরের কার্যালয় সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, “বিদেশ থেকে আগত মানুষদের আশ্রয় দেওয়ার দায়িত্ব নেওয়ার প্রসঙ্গে একজন মুখ্যমন্ত্রীর এহেন প্রকাশ্য বিবৃতি অত্যন্ত গুরুতর প্রকৃতির সাংবিধানিক লঙ্ঘনের প্রতিনিধিত্ব করে।”
আরও পড়ুন: হয়ে গিয়েছে বিরাট কেলেঙ্কারি! এবার মুসলিমদের কাছে ক্ষমা চাইবে শ্রীলঙ্কা সরকার, চমকে দেবে কারণ
বাংলাদেশে কেন হিংসাত্মক আন্দোলন চলছে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বিগত কয়েক দিনে সমগ্র বাংলাদেশ (Bangaldesh) জুড়ে (বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা) হিংসাত্মক আন্দোলনের রেশ ছড়িয়ে পড়ে। মূলত, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন পড়ুয়ারা। আর তারপরেই সরকারের সাথে পড়ুয়াদের মতবিরোধ তৈরি হয় এবং শুরু হয় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ। যেখানে প্রাণ হারান ১০০-রও বেশি জন। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ চলছে। কিন্তু গত সপ্তাহে এই আন্দোলনের রেশ আরও বেড়েছে।