বাংলা হান্ট ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ঘটেছে পরিবর্তন। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকার ওই দেশের দায়িত্বে এসেছে। ঠিক এই আবহে ভারতের বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলি বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে। এই ইন্ডাস্ট্রি সংক্রান্ত সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ৫ টি ভারতীয় বিদ্যুৎ কোম্পানির প্রতিবেশী দেশটির কাছ থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি পাওনা রয়েছে।
আদানিকে গভীর সঙ্কটে ফেলল বাংলাদেশ (Bangladesh):
এর মধ্যে আদানি পাওয়ারের প্রায় ৮০ কোটি ডলারের পাওনা রয়েছে। জানিয়ে রাখি যে, ভারত এবং এশিয়ার দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির মালিকানাধীন এই সংস্থাটি ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় ১.৬ গিগাওয়াট কোল বেসড প্ল্যান্ট থেকে একটি ডেডিকেটেড ট্রান্সমিশন করিডোরের মাধ্যমে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। একইভাবে, SEIL Energy India-র গত ৩০ জুন, ২০২৪ পর্যন্ত বাংলাদেশের কাছে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলারের বকেয়া ছিল। ওই কোম্পানিটি বাংলাদেশের (Bangladesh) সাথে ২৫০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি করেছে।
এদিকে, সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা NTPC তার ৩ টি প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে প্রায় ৭৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এমতাবস্থায় এই সংস্থাটির প্রতিবেশী দেশটির কাছে প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলারের পাওনা রয়েছে। এদিকে, PTC ইন্ডিয়ার মার্চের শেষে প্রায় ৮৪.৫ মিলিয়ন ডলারের পাওনা ছিল। এর মধ্যে ২৫ অগাস্ট পর্যন্ত ওই সংস্থাটি ৪৬ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে। ET-র ইমেলের জবাবে কোম্পানিটি এই কথা জানিয়েছে। এদিকে, বর্তমানে প্রতিবেশী দেশটির কাছে তাদের ৭৯ মিলিয়ন ডলারের পাওনা রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। PTC পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বিতরণ ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি থেকে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডকে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এই কোম্পানিটি ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশে (Bangladesh) বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে।
আরও পড়ুন: আদানি-আম্বানিকেও দেন টক্কর! ইনিই হলেন বিশ্বের সবথেকে ধনী মহিলা, চমকে দেবে মোট সম্পদের পরিমাণ
কার কত পাওনা: একইভাবে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ারও বাংলাদেশের কাছে পাওনা রয়েছে ২০ মিলিয়ন ডলার। তবে, NTPC, SEIL এনার্জি এবং পাওয়ার গ্রিড ET-র প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। এদিক, বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে একজন সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, কিছু কোম্পানি অর্থ প্রদান সংক্রান্ত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। যার মধ্যে কয়েকটি কয়লা কেনার সঙ্গেও যুক্ত। আধিকারিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে যে, ভারতীয় বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলি বকেয়া থাকা সত্বেও বাংলাদেশে (Bangladesh) সরবরাহ বন্ধ করেনি। যা দুই দেশের মধ্যে সুদৃঢ় সম্পর্ককে স্পষ্ট করে। তবে এই পরিস্থিতি চিরকাল চলতে পারে না। কারণ এই সংস্থাগুলিকে তাদের স্টেকহোল্ডারদের কাছেও জবাব দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ফের বিশ্বে হইচই ফেলে দিল চিন! চাঁদের মাটি নিয়ে চলছে গোপন পরীক্ষা, জানলে হয়ে যাবেন “থ”
এদিকে, আদানি পাওয়ারের একজন আধিকারিক এই বকেয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে, নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পর্কে মন্তব্য করতে রাজি হননি। পাশাপাশি একটি বিদ্যুৎ কোম্পানির একজন উচ্চপদস্থ আধিকার বলেন, “আমাদের দ্রুত সমাধান দরকার। তা না হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখা আমাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়বে। আমাদের ঋণদাতা এবং সরবরাহকারীদের অগ্রিম অর্থ প্রদানের প্রয়োজন।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গোড্ডা প্ল্যান্টটি ২০২৩ সালের জুলাই মাসে সম্পূর্ণরূপে চালু হওয়ার কথা ছিল। এটি আমদানি করা কয়লা ব্যবহার করে। একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ (Bangladesh) পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের শিডিউল অনুযায়ী আদানি পাওয়ার বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।