বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলাদেশে (Bangladesh) অস্থির পরিস্থিতি তৈরির পর থেকেই ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক। এই তিক্ততার মধ্যেই সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে বলেছিলেন, বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করা ভারতীয় মৎস্যজীবীদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। ভারতে ফিরে আসা মৎস্যজীবীদের সঙ্গে কথা বলেই নাকি তিনি একথা জানতে পেরেছেন। এবার নাম না নিয়েই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন বা বানানো’ বলে পাল্টা জবাব দিয়েছে ঢাকা।
মমতার অভিযোগ উড়িয়ে কী বলল বাংলাদেশ (Bangladesh)?
সমুদ্রসীমা অতিক্রমের দায়ে আটক ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীদের গত ৫ জানুয়ারি ফিরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। ওই একইদিনে ভারতে আটকে পড়া ৯০ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের-ও ফিরিয়ে দিয়েছে ভারত। দীর্ঘ দু মাসের বেশি সময় ধরে জেলে থাকা ভারতীয় মৎস্যজীবীদের সাথে কথা বলার পর সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ‘বাংলাদেশের হেফাজতে থাকাকালীন তাদের মারধর করা হয়েছিল। তারা আমাকে বলেছে তাদের মারধর করা হয়েছে।’ অন্যদিকে ভারতের থাকা বাংলাদেশী মৎস্যজীবীদের যথেষ্ট যত্ন নেওয়া হয়েছে বলই দাবি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে এবার নাম না নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আনা অভিযোগ অস্বীকার করল বাংলাদেশের (Bangladesh) বিদেশ মন্ত্রণালয়। তাঁদের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘আটক ভারতীয় জেলেদের ওপর শারীরিক নির্যাতন সহ ভিত্তিহীন মন্তব্য, দুর্ব্যবহারের মিথ্যা অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ চরম হতাশা ও তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করছে।’
আরও পড়ুন: ‘বদল চাই,’ এবার মমতাকে খোলা চিঠি অপর্ণাদের, কি লেখা তাতে?
বিবৃতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ এই সমস্ত ভিত্তিহীন অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। যা বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে আস্থার সদিচ্ছা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্ককে ক্ষুণ্ণ করে’। তাঁদের পক্ষে পাল্টা দাবি করা হয়েছে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে আটক মৎস্যজীবীদের শারীরিকভাবে কোনরকম নির্যাতন করা হয়নি। সম্পূর্ণ তদন্ত করেও কোন ধরনের নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ঢাকার বিবৃতিতে জানানো হয়েছে বাংলাদেশে আটক ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে বাংলাদেশে থাকাকালীন যথাযথ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক রীতি মেনে ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনের প্রতিনিধি দলকে কনস্যুলার অ্যাক্সেস দেওয়া হয়, যাঁরা আটক মৎস্যজীবীদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতের কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিরা গত ২ জানুয়ারি ভারতীয় মৎস্যজীবীদের জেল থেকে মুক্তির সময় তো বটেই এছাড়াও ৪ জানুয়ারি মংলা থেকে তাঁদের স্বদেশে ফেরার সময়েও উপস্থিত ছিলেন তাঁরা। যেসব হাসপাতালে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছিল তারাও নিশ্চিত করেছেন মৎস্যজীবীরা শারীরিকভাবে সুস্থই ছিলেন।