বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। যে কোনও মুহূর্তে অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে দেশটি। এই অবস্থার মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে হয় বাংলাদেশের। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারতের পূর্ব প্রান্তের অঞ্চলটিও পাকিস্তানের দখলে থাকে। সেটিকে বলা হয় পূর্ব পাকিস্তান। কিন্তু পাকিস্তান সরকারের অত্যাচারের ফলে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়। সৃষ্টি হয় বাংলাদেশের। সদ্য জন্ম নেওয়া নতুন এক দেশ যে একদিন তাদের প্রাক্তন শাসকদের টেক্কা দেবে (Bangladesh vs Pakistan) তা কে জানত!
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিও কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। কিন্তু তা হলেও তাদের ও পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থার মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক। বাংলাদেশের জিডিপি পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি। এমনকী, মুদ্রাস্ফীতির হারও অনেকটাই কম। তাদের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে এত অর্থ আছে যা পাকিস্তানের কাছে একটি স্বপ্নের মতো। ১৯৯০ সালের দিকে নিজেদের ভারতের সঙ্গে তুলনা করেত পাকিস্তান। অনেকেই বিশ্বাস করছিলেন যে এই দেশটির মধ্যে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে যা তাদের ভারতের কাছাকাছি নিয়ে আসতে পারে।
অনেক বিশেষজ্ঞ এও বলেছিলেন, আগামী দিনগুলিতে এই দু’টি দেশ আরও এগিয়ে যাবে। দু’টি দেশেরই জিডিপি একদম এক ছিল এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে অগ্রগতি করছিল দুই দেশই। কিন্তু দু’দশকেই সেই ছবি পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। ভারতের সঙ্গে তুলনা তো দূরস্ত, বাংলাদেশ অবধি তাদের ছাপিয়ে গিয়েছে। এক সময় বাংলাদেশি টাকা নিয়ে মজা করত পাকিস্তান। এখন সেই টাকার মূল্যই পাকিস্তানি রুপির থেকে অনেক বেশি হয়ে গিয়েছে। ২০০৮ সাল থেকেই পাক রুপির তুলনায় বাংলাদেশি টাকার দাম বাড়তে শুরু করেছিল।
বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছিলেন। অন্যদিকে, সন্ত্রাসবাদের জন্য অপমানিত হতে হচ্ছিল পাকিস্তানকে। অর্থনীতিবিদদের মতে, যে কোনও দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বোঝা যায় তাদের মুদ্রার হাল দেখে। সেই দেশের মুদ্রা যদি কমজোর হতে থাকে, তাহলে অর্থনীতিও ধাক্কা খায়। বিশ্ব ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জিডিপি ছিল ৮.৭৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে তাদের জিডিপি গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪১৬ বিলিয়ন ডলারে। অন্যদিকে, ২০২১ সালে পাকিস্তানের জিডিপি ৩৪৬ বিলিয়ন ডলার ছিল। ১৯৭১ সালে এই অঙ্ক ছিল ১০.৬৭ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২৫০৩ ডলার, যা পাকিস্তানের থেকে ৬০ শতাংশ বেশি। পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় হল ১৫৩৮ ডলার। বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে ৩৪ বিলিয়ন ডলার রয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের কাছে রয়েছে ৩.৬৭ বিলিয়ন ডলার। আর মাত্র তিন সপ্তাহ। তারপরেই অন্ধকারে ডুবে যাবে জিন্নার দেশ। এছাড়াও বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭৩ বছর। পাকিস্তানিদের গড় আয়ু ৬৭ বছর। বাংলাদেশে ৯৬ শতাংশ মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ আছে। পাকিস্তানের ৭৫ শতাংশ মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ আছে।