বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং, পরিষেবা ব্যবস্থাকে আরও সহজ করার পাশাপাশি বিপদও ডেকে আনছে। তাই ব্যাঙ্ক ( BANK ) গ্রাহকরা সাবধান হন। সাইবার অপরাধীরা ( Cyber Crime ) একটি লিঙ্ক পাঠাচ্ছে। যেটিতে ক্লিক করলেই শুন্য হয়ে যাবে আপনার ব্যাঙ্কের খাতা। মুলত আইকর সংক্রান্ত অজুহাতে চলছে এই সাইবার কলিং। আপনার কাছেও আসতে পারে এই ফোন কল। তাই খবরটি বিস্তারিত জেনে আগেভাগে সাবধানে থাকুন।
সম্প্রতি নয়াদিল্লির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সাইবারপিস ফাউন্ডেশনের সাইবার সুরক্ষা সংস্থা অটোবট ইনফোসেকের দ্বারা প্রকাশিত তদন্ত রিপোর্টে এই ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তা থেকে জানা যাচ্ছে, একদল সাইবার অপরাধীরা আমেরিকা ও ফ্রান্স থেকে এই জালিয়াতি পরিচালনা করছে। তাদের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের কাছে একটি ফোন আসছে, যেখানে আইকরের সংক্রান্ত বিষয় তুলে ধরে তাদেরকে একটি অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতে বলা হচ্ছে। আর সেখানেই বিছিয়ে রেখেছে তারা আসল ফাঁদ।
‘HTTP’ প্রটোকল ব্যবহার করে গ্রাহকদের একটি লিঙ্ক পাঠাচ্ছে তারা। যেটিতে ক্লিক করলেই খালি হয়ে যাচ্ছে ব্যাঙ্কের খাতা। এমনকি তারা ‘Google Play Store’ থেকে ওই অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করতে নিষেধ করছে। বলা হচ্ছে শুধুমাত্র তাদের তরফে যে লিঙ্ক টি পাঠানো হচ্ছে, সেখানেই গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যাক্তিগত তথ্য নিবন্ধ করতে বলা হচ্ছে।
ক্রমবর্ধমান এমন সাইবার অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার অনলাইন জালিয়াতির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কড়া প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সরকারের তরফে ডিজিটাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (DIU) আনার জন্য তোড়জোড় শুরু হয়েছে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক এই প্রকল্পে কাজ করছে বলে জানা যাচ্ছে। ডিজিটাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট কাজ করবে পুলিশ, সাইবার সেল এবং ব্যাঙ্কগুলির সমন্বয়ে। ডিআইইউ ( DIU ) , পেমেন্ট পরিষেবা সরবরাহকারী এবং টেলিকম অপারেটরদের সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে এই অপরাধের বিরুদ্ধে কাজ করবে বলেও জানা যাচ্ছে।
জানিয়ে দি, এসবিআই ( SBI ), আইসিআইসিআই ( ICICI ) ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি, এক্সিস ব্যাংক এবং পিএনবি ব্যাঙ্ক গ্রাহকরাই এই প্রতারণার শিকার বেশি হচ্ছেন।
এখন উল্লেখযোগ্য বিষয় হল কীভাবে এমন অনলাইন জালিয়াতি এড়ানো যায় ?
সাইবার ক্রাইম এড়াতে আপনার অবশ্যই কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সেগুলি নীচে তুলে ধরা হল-
1. আপনার ওটিপি কারও সাথে ভাগ করে নেবেন না।
২. যদি আপনি এমন কোনও এসএমএস ( SMS ) পান যেখানে কোনও লিঙ্ক দেওয়া হয়েছে, এটি একেবারেই খুলবেন না। অনলাইন প্রতারকরা সর্বদা এসএমএস করে, যার মধ্যে একটি লিঙ্ক থাকে। এই লিঙ্কটি ক্লিক করে আপনি অনলাইন জালিয়াতির শিকার হতে পারেন।
৩. কিউআর কোডের মাধ্যমেও জালিয়াতি করা হয়। সুতরাং, অনলাইন লেনদেনে QR কোডটি স্ক্যান করার আগে, আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থটি যাচ্ছে বা আসছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখুন। এই জাতীয় প্রতারণা সাধারণত ওএলএক্স-এ বেশি দেখা যায়।
৪. সর্বদা একটি বড় এবং ভাল ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে কেনাকাটা করুন। কোনও অজানা সাইট থেকে কেনাকাটা করবেন না। জিনিসগুলি প্রতারণামূলক হতে পারে, তার জন্য এ জাতীয় ওয়েবসাইটে খুব সস্তায় জিনিসপত্র প্রদর্শিত হয়। জালিয়াতির পরে এ জাতীয় সংস্থাগুলির সাথে যোগাযোগ করাও কঠিন হয়ে ওঠে।
5. আপনার ক্রেডিট / ডেবিট কার্ড ( CREDIT CARD / DEBIT CARD ) সামনে সোয়াইপ করুন। ছোট লেনদেনের জন্য কার্ডটি আলতো চাপুন। আর আপনার এটিএম পাসওয়ার্ডও কারও সাথে কখনই ভাগ করবেন না।