বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে (Recruitment Scam) ধৃত তৃণমূল (TMC) কংগ্রেস যুবনেতা কুন্তলের (Kuntal Ghosh) সই করা চেক ফিরিয়ে দিয়েছে ব্যাঙ্ক। সেই চেক নিয়ে রীতিমতো দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়িয়েছেন বছর ৫৪ এর অরুণ সামন্ত। তবে কোনো কূল খুঁজে পেলেন না তিনি। চেকের তলায় সই রয়েছে শিক্ষক দুর্নীতির অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষের। চেকটি ফিরিয়ে দিয়েছে ব্যাঙ্ক।
অরুণ সামন্তকে চেকটি ধৃত কুন্তলের নাকি জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কী করে বলি বলুন তো! আমি তো নিজের হাতে কুন্তলকে টাকা দিইনি! যাকে দিয়েছিলাম, কুন্তলের সই করা এই চেকটা দিয়েছিলেন তিনিই।’’ পরের কথা, “সন্টু বাগ নামের একজনকে টাকা দিয়েছিলাম, এই তো দিন দশেক আগেও সন্টু বলেছেন, চিন্তা করবেন না। ছেলের চাকরি হয়ে যাবে,’’ ধরা গলায় বলেন অরুণ। জমি বিক্রি করে, স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে মোট ১০ লক্ষ টাকা রীতিমতো কোর্ট পেপারে সই করে তুলে দিয়েছিলেন সন্টুর হাতে।”
প্রৌঢ় বলেন, তার বড় ছেলে ঋজুকে রাজ্যের কৃষি দফতরে আর ছোট ছেলে রিংশুকে স্কুলশিক্ষকের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন সন্টু। সন্টুর কাছ থেকেই কুন্তলের কথা জানতে পারেন তিনি। কুন্তল ও সন্টু দুজনেই হুগলির বাসিন্দা। সন্টুর পরিচয় জিজ্ঞেস করলে অরুণ বলেন, বড় ছেলের বন্ধুর মামা সন্টু। সন্টু প্রথমে ন’লক্ষ টাকা চান। পরে আট লক্ষে চুক্তি হয়।
অগ্রিম দু’লক্ষ টাকা নিয়ে করা চুক্তিপত্রে সই করে সন্টু লিখে দেন, ২০ দিনের মধ্যে কৃষি বিভাগের ‘গ্রুপ সি’ বা তৃতীয় শ্রেণির কর্মী-পদে চাকরি না-হলে ওই পুরো টাকা ফেরত দেবেন তিনি। তবে কিসের কী। তার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় দুবছর। অরুন বলেন, ‘‘কুন্তলের নাম করে সন্টু এমন ভাবে নিশ্চিত করে বলেছিলেন যে, পুরোপুরি বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু ১০ লক্ষ টাকায় একটি চাকরিও হয়নি।’’
পুলিশের কাছে জানানোর কথা উঠলে অরুন বলেন, ‘‘নিজেই তো অন্যায় করেছি। কোন মুখে যাব। কয়েক দিন আগে পর্যন্তও মনের মধ্যে আশা ছিল, চাকরি একটা হয়ে যাবে। বড় ছেলের না-হলেও ছোট ছেলেরটা হবে। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি, ঠকে গিয়েছি।” অরুনবাবু আরও বলেন, প্রথমে দু’লক্ষ টাকাই নিয়েছিলেন সন্টু। কোনও ছেলের চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে সন্টু কুন্তলের সই করা ৪০ হাজার টাকার চেকটি এনে দেন। কিন্তু ব্যাঙ্কে জমা করতেই সেটি বাউন্স করে। সব হারিয়ে এখন দিকভ্রষ্ট অরুণবাবু।