বাংলাহান্ট ডেস্ক : কাশ্মীরে প্রবল তুষারঝড়ের সামনে পড়ে অকালে প্রাণ হারালেন বাঁকুড়ার বাঙালি সেনা জওয়ান। ওই তরুণ সেনা জওয়ানের নাম সৌভিক হাজরা। মাত্র ২১ বছর বয়সেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে অমৃতলোকের উদ্দেশ্যে রওনা দিল সৌভিক। গতকাল তিনি যখন কাশ্মীরের মাচাল সেক্টরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করছিলেন তখন হঠাৎ করেই তুষারঝড় শুরু হয়। সেই তুষারঝড়েই তিনি গুরুতর জখম হন। তারপর গতকাল তাঁকে কুপওয়াড়া সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
এই শনিবার সকালে সৌভিকের মৃত্যুর খবর পৌঁছে যায় বাঁকুড়ার ওন্দা থানার খামারবেড়িয়া গ্রামে তাঁর বাড়িতে। সৌভিকের মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছতেই শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা গ্রামে। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়ের অসুস্থতার কারণেই মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মাতৃহারা হয় সৌভিক। তাঁর মা দিপালী হাজরার অবর্তমানে সৌভিক খামারবেড়িয়া গ্রামে তাঁর মামার বাড়িতেই মানুষ হন। দিদা বাসন্তী ব্যানার্জী তাঁকে ছোটো থেকে আগলে রাখেন।
সৌভিক ২০১৯ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন যখন তিনি ওন্দা থানা কলেজের সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। নাসিকে প্রশিক্ষণের পর তাঁকে প্রথমে পাঞ্জাব, তারপর আসামে এবং অবশেষে কাশ্মীরে পোস্ট করা হয়। পুজোর আগে এক মাসের ছুটি নিয়ে তিনি ঘুরতে এসেছিলেন তাঁর মামাবাড়ির গ্রামে। এরপর ভাইফোঁটা নিয়েই কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ির সকলের সঙ্গে ভিডিও কলে গল্পও করেন । কাশ্মীর থেকেই তিনি ফোনটা করেছিলেন বলেই জানা গিয়েছে।
সৌভিকের এই মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না খামারবেড়িয়া গ্রামের মানুষ। সৌভিকের কফিনবন্দী দেহ আজ বিমানে করে দমদম বিমানবন্দরে আনার পর সেখান থেকে তাঁর মরদেহ খামারবেড়িয়া গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হবে বলেই জানা গিয়েছে। এর আগেও উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশীতে তুষারঝড়ের বলি হয়েছিলেন মহেশতলার অমিত কুমার সাউ এবং অপরজন সন্দীপ সরকার।